আটলান্টিকের কোনা আর স্পার্ন নদীর তীর ঘেঁষে সাইকেল চালিয়ে আসলাম 🙂
ঘুরতে গেছিলাম Schoterbos, আবহাওয়া’র পুর্বাভাস অনুযায়ী ঘণ্টাখানেক পরে বৃষ্টি নাম্বার কথা। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখি আকাশ ব্যাপক পরিষ্কার। ওইখানে বেশ কিছুক্ষণ ঘুরাফিরা করে, আকাশ যেহেতু পরিষ্কার আছেই, সাইকেল নিয়ে আগালাম। তারপর Santpoort-Zuid হয়ে একটা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যেতে লাগলাম। ওইটা আসলে Burgemeester Rijkensparkছিল। এই পার্কটার ভিতরে একটা ঘোড়ার র্যাঞ্চ আছে। যখন বনের ভিতরে ঢুকছিলাম, তখন বুঝিনাই, চারপাশে ঘন বনের মাঝখানে বন্য প্রাণীর ডাক শুনেই আৎকে উঠছিলাম :p বনের মধ্যে এইরকম ঘোড়ার আস্তাবল, দেখতেই সেইরকম লাগতেছিল।
এরপর Velserbeek থেকে সামনে এসে দেখি সামনে সুন্দর নীল পানিওয়ালা নদী। ব্যপক সৌন্দর্য!! সেখান থেকে ভাবলাম নদী যেতু পাইছিই, আর আশেপাশে আটলান্টিকও থাকার কথা, একটু মোহনা ঘুরেই যাই। কিন্তু মোহনা দেখতে গিয়ে বাতাসের উল্টা দিকে সাইকেলিং করতে হইছে।
ভাবছিলাম কাছেই তো কয়েক কিলো হবে, কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক ধরে প্যাডেল করেও বেশী দুর আগাতে না পেরে Heerenduinen এর দিকে চালানো শুরু করলাম। এইদিকে হালকা উঁচু পাহাড়ের পাশ দিয়ে হাইওয়ে রাস্তা চলে গেছে। সেটার পাশ দিয়ে সুন্দর হাঁটার রাস্তা আর সাইকেলের রাস্তা আছে। ওইখান দিয়ে “নীল আকাশের নিচে” গাইতে গাইতে বেশ কিছুক্ষণ চালানোর পরে Ijmuiden Aan Zee সমুদ্রে সৈকতে পৌছুলাম। মানুষজন সার্ফিং করতেছিল। ব্যপক বাতাস। ওইখানে সী-পোর্ট এর কাছে একটা লম্বা প্লাটফর্মের মত আছে, প্রায় কিলোমিটার খানেকের মত সমুদ্রের ভিতরে চলে গেছে। সেটা ধরে অনেক দুর গেলাম। তখন সূর্য পরে আসছে কেবল। গাংচিল গুলো বাতাসের বিপরীতে এমনভাবে উড়তেছে, দেখে মনে হচ্ছে থেমে থেকে রোদ পোহাচ্ছে!!
এরপর Marina Seaport IJmuiden হয়ে ভাবলাম Spaarnwoude হয়ে ফেরত যাব। ঠিক করলাম, আগেরবার তো বাতাসের উল্টা দিকে আসছি, এইবার বুঝি একটু সুবিধা পাব। কিসের কি! যাওয়ার সময় আবার উল্টা বাতাস। সারা রাস্তা দুই মিনিট প্যাডেল মেরে বিশ মিনিট ধরে জিরায়ে নিয়ে কোনমতে Golfbaan Spaarnwoude নামে একটা গলফ এরিয়ার কাছাকাছি আসছি। সকালবেলা দু মুঠো অন্ন মুখে দিয়ে বেড়িয়েছিলাম। যেই খিদা লাগছে!! কিন্তু আশেপাশে পুরাই জঙ্গল, খাবার দাবাড়ের দোকানে যাব তো দুরের কথা সারাদিন সাইকেল চালিয়ে পুরাই টাল।
Spaarndam এর ওখানে ব্রিজের উপর গিয়ে ব্যপক প্রশান্ত একটা বাতাস পেলাম। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে, দিগন্তের দিকে তাকিয়ে টকটকে লাল আভা থেকে কিছু শক্তি সঞ্চয় করলাম, আর মনে মনে খরগোশ-কচ্ছপের গল্পের মত বলতে লাগলাম – “ঐ যে পাহাড়, গাছটাও দেখা যাচ্ছে। ওখানে আমাকে যেতেই হবে।” এরপর স্পার্ন নদীর তীর ধরে মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে সাইকেল চালিয়ে (কখনো চালিয়ে, কখনো ঠেলে) Haarlem, Netherlandsপৌছুলাম। আহ! বাড়ী, মিষ্টি বাড়ী 🙂
54.6 km. Lots of calories(!) burned. Though gained nearly much multiple of them later in Almere.
Error fetching Flickr photos: XML or PCRE extensions not loaded!