আমার মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের শিক্ষাটা আমাদেরকে একটু ভিন্নভাবে দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হিসেবে আমাদের স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ে সব সময়ই কিছু না কিছু থাকে। এই ব্যাপারটা খুবই ভাল। কিন্তু মাঝে মাঝে ইতিহাসের অংশ হিসেবে কে বা কারা এইটা করেছিল সেটা নিয়ে একটু মাতামাতি করা হয়। আমার মনে হয়, তার বদলে, ইতিহাসের মুল বক্তব্য হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধের কারণ এবং সেখান থেকে আমাদের উন্নয়নের পথগুলো থাকা উচিত।
এই নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে, দুইটা ব্যাপার আমার কাছে খুবই গুরুত্বপুর্ন মনে হয়েছে –
১। আমরা যে এত বড় একটা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি, এইটা জাতি হিসেবে আমাদের প্রত্যয়কে তুলে ধরে, এই আত্মবিশ্বাসটা ছোটদের মাঝে ছোটবেলায়ই দিয়ে দিতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের বইগুলোতে এই ব্যাপারটা কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সেটা নিয়ে বিস্তারিত চিন্তা করা যেতে পারে।
২। সাথে সাথে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আর ব্যপকভাবে বিশ্লেষণ করা উচিত। ৩০ লক্ষ শহীদ হারানোর ক্ষত থেকে উঠে আসতে আমাদের কিরকম সময় লাগবে সেটার একটা লক্ষ্য দিয়ে দিতে পারলে ভাল হয়। অথবা অন্ততপক্ষে কেন আমাদের উঠে দাঁড়াতে এত সময় লাগছে, কোন পেশায় আমরা কতজন শ্রমিক–বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছি, দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের যে সেটা পূরণ করতে হবে এইটা মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে।
এত কষ্ট করে অর্জন করা স্বাধীনতা নিয়ে আমরা কাউকে খেলা করতে দিতে পারিনা। দেশ হিসেবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাশের দেশগুলোর তুলনায় আমরা এর মধ্যে অনেক দ্রুতগতিতে আগাচ্ছি। অন্যান্য দিকগুলোতেও আগানোর অংশ হিসেবে, সবার আগে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে এই চিন্তাভাবনা গুলো পৌঁছে দেওয়াটাই সবচেয়ে দরকারি বিষয় এখন।