আজকের সকালটা বেশ পরিষ্কার। শোবার ঘরের পর্দাটার ফাঁক দিয়ে আলতো করে সকালের মিষ্টি রোদটা এসে বিছানার পাশের টেবিল ল্যাম্পের উপর পড়ছে। গতদিনও সকালে মিষ্টি রোদ ছিল, কিন্তু পর্দা টানানো ছিল বলে আজকের মত এত পরিষ্কার ছিলনা। বেশ কিছুদিন ধরে শীত শীত ভাবটা একটু বেশী। কম্বল ছেড়ে উঠতেই ইচ্ছা করে না।
– আরেহ, এত সকালে ঘুম থেকে উঠে গেছ!
– সু প্রভাত!
– বাব্বাহ! বেশ খোশ মেজাজে আছ মনে হচ্ছে। ঘুম থেকে উঠেই সাহিত্য শুরু করে দিয়েছ!
– সাহিত্য কই দেখলে, অনেকদিন পর একটা জম্পেশ ঘুম দিলাম।
– হুমম, অন্যান্য দিন ঘুমের ভিতর কেউ বিরক্ত করে বুঝি!
– তা তো একটু করেই।
– চা খাবে?
– নাহ, চা খাব না।
– কফি বানিয়ে দেই?
– কফি পেলে মন্দ হয় না। আচ্ছা, আজকে বরং আমিই কফি বানাই।
( কিচেনের ক্যাবিনেটগুলাতে কিছুক্ষণ খুঁজাখুঁজির পর )
– এই, নেসক্যাফে‘র কৌটাটা কই রেখেছ?
– হয়েছে! তুমি বানাবে ছাই, একটা কৌটাই খুঁজে পাচ্ছনা! দেখি দাও আমাকে।
– এই জন্যই তো তুমি এত্তগুলা ভাল।
– আর ঢং করতে হবেনা। আমি আছি বলে জিনিসগুলো অন্তত চাইলে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, তোমার মত আউলাঝাউলা হলে তো খবরই ছিল।
– আহা, তুমি সবকিছু যেভাবে গুছিয়ে রাখ, তাতে আমার কফির কৌটা খুঁজার কি দরকার! খালি তোমাকে খুঁজে পেলেই হল।
– তা আর বলতে। এই, হচ্ছেটা কি!
– কি হচ্ছে আবার, কিছুই হচ্ছে না।
– একদম শয়তানি করবানা এখন।
– আচ্ছা, ঠিক আছে করবনা।
– কফি বানিয়ে দিচ্ছি, তারপর নাশতা খেয়ে সোজা অফিসে চলে যাবা।
– জো হুকুম। তুমি বেরোবে না ?
– হ্যা বের হব তো। একসাথেই বের হব।
বাসার সামনের কাগজীফুলের ডালে ফুলগুলো আজকে কড়া গোলাপি রঙ ছড়িয়ে বসে আছে। দরজা খুলে ফুলগুলো দেখলে যে কারও মন ভাল হয়ে যেতে বাধ্য। তার উপর আবার পাশেই রজনীগন্ধা ফুটবে কিছুদিন পরে। সবকিছু সামলানোর পরে আবার কি সুন্দর করে এই কাজগুলো যে ও করে!