কোন একটা কিছু কার কাছে কি কাজে আসছে, এটা নির্ভর করে তারা কি কাজ করতেছে তার উপর। আমি আমার ব্যাপারটা বলতে পারি।
আমি মূলত কাজ করি Software Development নিয়ে। আপাতত যে কোম্পানিতে কাজ করছি, সেখানে আমি “মানুষের” জন্য একটা Software বানাচ্ছি। “মানুষ” শব্দটা কোটেশন করে বললাম, কারন যেই সার্ভিসগুলো আমি বানাই, সেগুলো অনেক অনেক মানুষ ব্যবহার করে। আবার যারা ব্যবহার করতেছে, তারা যাতে আরও ভালভাবে সুবিধা পায় বা যাতে আরও বেশি বেশি মানুষ এটা ব্যবহার করে, সেজন্য নতুন নতুন ফিচার বানাতে হয়। Sociology’র কিছু জ্ঞান থাকার কারনে আমার টিমের একজন User Researcher যখন আমার কাছে একটা আইডিয়া নিয়ে এসে বলে এইটা ভাল কাজ করবে, তখন আমি তার কথা সহজে বুঝতে পারি। অথবা না বুঝতে পারলেও প্রশ্ন করতে পারি।
Sociology কোর্সটা আমার যতটা না কাজে লাগতেছে, তার থেকেও বেশী কাজে লাগবে আমাদের ICT Division এর ভবিষ্যতে যেই লোকগুলো দেশের ICT নিয়মগুলো প্রবর্তন করবে তাদের জন্য। তাছাড়াও, HCI নিয়ে যে এখন যে কাজগুলো হচ্ছে, তাদের বেশীরভাগ এর জন্যই Sociology বিষয়টা অনেকটা Physics এর পড়াশুনায় Gravitational Law এর মত গুরুত্বপুর্ন।
এ তো গেল, শুধু Sociology। এটা ছাড়াও যে Government, Economics, Business Law আছে, এগুলোর প্রত্যেকটারই ভ্যালু আছে। ডিপেন্ড করে কে কি ধরনের কাজ করতেছে। কারও কাজে হয়ত Government কোর্স এর কনটেন্টগুলো খুব দরকার হবে, আবার অনেকে সেগুলো ছাড়াই জীবন পার করে দিতে পারবে। কাহিনী হচ্ছে, BUET CSE ডিপার্টমেন্ট তো জানেনা, কে বড় হয়ে কি হবে ? তাই ডিপার্টমেন্ট এ কোর্স কারিকুলাম সেট করার সময় এই ধরনের কিছু কিছু সাবজেক্টকে মেইন পড়াশুনার অংশ হিসেবে রাখে। আবার কে ICT মন্ত্রণালয়ের সচিব হবে, কে আমেরিকা’র HCI ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর হবে, আর কে মানুষের জন্য সফটওয়ার বানাবে, এগুলোর কোনটাই আগে থেকে বলা যায়না। তাই এই কোর্সগুলার আবার অল্টারনেট কোর্সও থাকে। জিনিসটা অনেকটা Humanities ডিপার্টমেন্ট এ ২০টা কোর্স আছে, সব পড়াতে গেলে ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনেক কিছু বাদ দিতে হবে। সেটা তো করা যাবে না। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং মেইন ফোকাস এ রেখে, Humanities এর অল্প কয়েকটা কোর্স পড়ানো হয়।
অনেকের ক্ষেত্রে এই জিনিসগুলো খুবই সাদামাটা অথবা নগণ্য মনে হয়। সেটারও বিভিন্ন রকম কারন থাকতে পারে –
১) তার এই ধরনের কাজে খুব একটা আগ্রহ নাই ( তার হয়ত অন্য বিষয়ে বেশি আগ্রহ )
২) তারা এই ধরনের টপিক নিজের পরিবার থেকে বা বন্ধুবান্ধব বা বৈষয়িক এক্সপার্ট লোকেদের সাথে চলাফেরায় অলরেডি শিখে ফেলেছে ( বা মনে করছে যে শিখে ফেলছে )
৩) যখন যে কাজ করা লাগবে, তার প্রয়োজনে যা যা কনসেপ্ট লাগে সেটা কাজ করত করতে শিখে নিতে পারব, এরকম আত্মবিশ্বাস আছে।
আরও অনেক রকম কারন থাকতে পারে। তবে যে কারনই হোক, সেটা যে সবার ক্ষেত্রেই হবে, এমন নাও হতে পারে। এই জন্যই আলাদা করে কোর্স কারিকুলাম এর মধ্যে রাখা।
btw, আমি যদি রোবট হতাম, আর কোন একটা রোবটের জন্য Software বানাতাম, তাহলে হয়ত আমার Sociology লাগত না। কারন আমার জানামতে বর্তমান সময়ে Robot দের ভিতরে সমাজব্যবস্থা এখনও তৈরী হয়নাই। যখন এরকম কিছু হবে, তখন রোবটরাও তাদের স্কুলে “Robot Sociology” / “Robotology” নামে সাবজেক্ট পড়াশুনা করবে, যাতে করে তরুণ Robot রা বড় হয়ে অন্যান্য রোবটের জন্য কাজ করতে পারে। জিনিসটা ভাবতেই অনেকটা Science Fiction মত মনে হচ্ছে :p
Leave a Reply