"We human being, always find a solution, maybe not today, but if you really want to solve a problem, there’s always a way" – Ma Yun @ Stanford, 2013

Career as a Software Engineer – Part 2 ( Planting the seed )

by Md Imran Hasan Hira
( Link for Part 1 – Career as a Software Engineer – Part 1)

আজকের পোষ্ট কিভাবে তিমি মাছের চটপটি দিয়ে সেমাই রান্না করবেন, সেটা নিয়ে। স্যরি, কিভাবে দুই টাকা ইনকাম করে এক টাকা খরচ করবেন ? ধুর ছাই, কিভাবে টিউশনির টাকা দিয়ে ভবিষ্যত কিনবেন…

খুব কঠিন একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি, ক্যাম্পাস লাইফে পোলাপান কিভাবে সময় ব্যয় করে ?
১। র‍্যাগ কর্নারে আড্ডা দিয়ে
২। স্বপ্ন দেখে ( ঘুমিয়ে/দিনের বেলা )
৩। টিউশনি করে
৪। ফুটবল খেলে
৫। পার্টটাইম চাকুরী করে
৬। টিচার ফাইটীং করে
৭। ডিবেটীং ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, সিস্টেম ডিজাইন ক্লাব এই সমস্ত হাবিজাবি(!) কাজ করে
৮। …

এগুলার ভিতরে #৩ আর #৫ থেকে সরাসরি কাচা টাকা হাতে আসে। অনেকে হয়ত বুয়েটে ঢুকার আগে থেকেই টিউশনি করে। একজন বুয়েট স্টুডেন্ট একটা টিউশনি থেকে মাসে গড়ে ৮,০০০ টাকার মত পায়। দুইটা করালে ১৬,০০০ টাকা। আর তিনটা করালে তো কথাই নাই। ( যারা টিউশনি করাওনা, তারা মন খারাপ কইরনা, এইটা শুধুমাত্র হিসেব করার জন্য বলা )

টাকা খরচ করার বেলায়ও যে কম, তাও না। চারপাচজন মিলে ভাল রেস্টুরেন্টে খাইতে গেলেও জনপ্রতি ৩০০টাকা করে ১৫০০টাকা হুট করে গায়েব। তাও তো ৩০০ টাকা ধরছি। পলাশীর মোড়ের বার্গার হইলে কিছু কম যাবে, আর বনানীর রেস্টুরেন্ট হইলে, একেবারে খেয়ে দিবে।

এই যে পাই পাই করে টাকা পয়সার হিসেব করলাম, তার কারন হইতেছে নিজেকে ডেভেলপ করার জন্য কোথায় ফোকাস করব সেটা খুঁজে বের করা। একটা সময় আমি নিজেও জানতাম না কিভাবে কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে ফোকাস করতে হয়। পাস করে বের হয়ে বিভিন্ন কাজ-কর্ম করার পর বুঝলাম, ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমাদের খুব ভাল একটা কোয়ালিটি হইতেছে আমরা যদি কোন কিছুতে ফোকাসড থাকি, তাইলে সেই টপিকে আমরা দ্রুত ভাল করতে পারি। আমি নিজে এখনও শিখার চেষ্টা করছি কিভাবে নতুন স্কিল জানার জন্য ফোকাস করতে হয়।

আমার নিজের টিউশনি করাতে মজা লাগত। শুরুর দিকে টিউশনি করাতাম বাসা থেকে টাকা-পয়সা নিবনা বলে। পরে যখন তিনটা টিউশনি করাতাম, তখন অনেকটা টাকার মোহে। যখন হাতে অনেক টাকা আসতে শুরু করল, তখন মাঝে মাঝে বান্ডিল ধরে খালি টাকা গুনতাম [১]। অনেক টাকা বলতে, আমার কাছে এগুলাই অনেক টাকা ছিল। ছোটবেলা থেকে ২টাকা করে জমাতাম তো, তাই পাঁচশ টাকার নোটই অনেক বড় লাগত।

যাই হোক, একটা পর্যায়ে গিয়ে মনে হইল, টিউশনি করায়ে শুধু টাকা পয়সা ছাড়া নিজের খুব একটা লাভ হচ্ছেনা। সেই ইন্টারের জ্ঞানই বেচে খাচ্ছি। নতুন জ্ঞান আহরণ হইতেছে না। তারপর বন্ধু-বান্ধবের পাল্লায়(!) পরে কোডিং এ মনোনিবেশ করলাম। কিছুদিন পরে একটা পার্টটাইম চাকুরী শুরু করলাম। একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখলাম পার্টটাইম কাজের *** টিকতে পারতেছি না। জিনিসটা পার্টটাইম কাজের সমস্যা না। কাজ করতে মজাই লাগত। নতুন নতুন জিনিস শিখতেছি এটাও ভাল ব্যাপার ছিল। সমস্যা হইল, আমার টিউশনি ছিল মগবাজার আর বনানীতে। যেতে আসতে অনেক সময় লেগে যেত। একটা পর্যায়ে গিয়ে বনানীর টিউশনি ছেড়ে দিলাম। পড়াতে আমার ভাল লাগে, অন্তত যে জিনিসটা নিজে বুঝি, সেটা। তাই ছেড়ে দিবার সময় খারাপ লাগছিল। এর পরেও মগবাজার এ যাদেরকে পড়াতাম, ওদেরকে শুরু থেকে পড়াচ্ছি আর এমনিতে পছন্দ করি দেখে ওটা চালিয়ে যেতে থাকলাম। তারপর সেখানেও একদিন আন্টিকে ডেকে বললাম যে আমার কাজের জন্য সময় দেওয়া টাফ হয়ে যাচ্ছে।

এই হইল টিউশনি ছেড়ে পুরা পার্টটাইম কাজে মনোনিবেশ করার গল্প। তারপর ফোর্থ ইয়ারে উঠে BSADD নামক একটা মরীচিকার ফাঁদে পড়ে আত্মহারা হয়ে গেলাম। আমরা বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে ডিপার্টমেন্টের জুনিয়রদেরকে কিভাবে Software Development শিখানো যায়, সেটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। তারপর একদিন BSADD এর কাজের জন্য পার্টটাইম চাকরীটাও ছেড়ে দিলাম।

তো টিউশনির ব্যাপারে ফেরত আসি, তিনটা টিউশনি আসলেই লাগবে কিনা। কারও যদি পারিবারিক ব্যাপারে কিংবা নিজের প্রয়োজনে লাগে, সেখানে দ্বিমত করার কিছু নাই। লাগতেই পারে। বাকি ক্ষেত্রে আমরা একটু চিন্তা করতে পারি। যেমন অতিরিক্ত একটা টিউশনি থেকে যেই অতিরিক্ত ৮০০০ টাকা আসতেছে, এবং সেটার জন্য যেই পরিমানে সময় দিতে হইতেছে, সেটা কি আসলেই দরকারি? এমনও তো হতে পারে যে, ওই অতিরিক্ত সময়টাতে ডিপার্টমেন্টে স্যার-ম্যাডামদের সাথে টুকটাক কাজ করতে পারতেছ, অথবা কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং কনটেষ্ট এ সময় দিতেছ, নাইলে হুদা কামে বিভিন্ন সফটওয়ার বানাচ্ছ (i.e. Deep Learning দিয়ে Snake গেম এর ইন্টেলিজেন্স বানিয়ে ফেলা) ।

একই কথা, পাস করে যারা চাকরীতে ঢুকতেছ বা অলরেডি আছ, তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ধর তোমার কাছে দুইটা চাকরীর অপশন আছে – একটা বেশী প্রেশারের চাকরি, বেতন ১৫,০০০ টাকা বেশী। আর একটা মাঝারি প্রেশারের চাকরি, বেতন আগেরটা থেকে কম। এখন প্রথম চাকরিটা না করার কারণে যত টাকা কম বেতন পাবা, সেটাকে যদি নিজের ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ইনভেষ্টমেন্ট হিসেবে দেখ, ব্যাপারটা কি ভবিষ্যতের জন্য ভাল কিছু হচ্ছে কিনা সেটা চিন্তা করে দেখতে পার। হয়ত দেখা যাবে ১৫,০০০ টাকা কম বেতন পাচ্ছ, কিন্তু যে অতিরিক্ত সময়টা ফ্রি পাচ্ছ, তাতে  GRE/TOEFL প্রিপারেশন নিতে পারতেছ, বড় বড় ইউনিভার্সিটির প্রফেসরদের সাথে যোগাযোগের সময় দিতে পারতেছ, অথবা সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সময় দিতে পারতেছ।

দিনশেষে আসল কথা হইতেছে তিন-চার বছরের টাইমস্প্যান চিন্তা করলে “মাসে ১৫,০০০ টাকা করে বছরে প্রায় দুই লাখ টাকা লস” বনাম “যেটা অর্জন করতে চাইছিলা (হায়ার স্টাডি/গবেষণা/ইন্টারভিউ/…) , সেটার প্রস্তুতি নিতে পারনাই” এই দুইয়ের ভিতরে ডিসিশন নিতে পারতেছ কিনা?

আর একটা বাস্তবতা হইতেছে, এইগুলার সবগুলাই যে করা যাবেনা, এমনও না। কিছু কিছু মানুষ আছে, যারা তিনটা টিউশনি করিয়ে আবার ওইদিকে সেই লেভেল এর কোডিং করছে, তারপর এখন আবার PhDও করতেছে। আমারই কিছু বন্ধু আছে, যারা ফুলটাইম চাকরি করে, আবার সাথে সাথে গবেষণায়ও ফাটায়ে দিচ্ছে। কিন্তু এইরকম মানুষের সংখ্যা কম। এইটা বললে তো বলবা – “কি বলেন ভাই, তাইলে রাফায়েল নাদাল আর রজার ফেদেরার যে ম্যাচের পর ম্যাচ জিতে যাচ্ছে, কিভাবে পারতেছে?” তখন আমি অট্টহাসি দিয়ে বলব – “মু হা হা হা, তুমি যদি রাফায়েল নাদালই হইতা, তাইলে এই পোষ্ট পইড়া টাইম নষ্ট করতা না।”

বুয়েটে পড়াকালীন সময়ে আমাদের মনের ভিতরে অনেক কিছু করারই ইচ্ছা থাকে। অনেক অনেক স্কিল ডেভেলপ করার সময় থাকে। তুমি যদি একসাথে চার পাঁচটা স্কিল প্যারালালি ডেভেলপ করতে পার, সেটা অবশ্যই ভাল। না পারলে, অন্তত একটা একটা করে ধরে শেষ করতে পারলেও তিন-চার বছরের ভিতরে বেশ কিছু স্কিল শিখে ফেলতে পারবা। যদি ভাল কোন কিছু করার ইচ্ছা থাকে, সেইটা করতে পারলে তো নিজেরই মনে শান্তি, নাকি? তাই, চেষ্টা করে দেখতে কোন সমস্যা নাই 🙂

পুনশ্চঃ
(১) বান্ডিল ধরে টাকা গুনার ব্যাপারটা জোকস ছিল। গল্পের প্রয়োজনে আশা করি ক্ষমাযোগ্য অপরাধ হবে এইটা।
* বেশী বেশী টিউশনি করা খারাপ কিছু না। কারও যদি এটা নিয়েই থাকার ইচ্ছা থাকে, তাহলে বাংলাদেশে সেটাও ভাল ক্যারিয়ার হতে পারে। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কোন ধরনের ক্যারিয়ারের জন্য নিজেকে তৈরী করবা, সেইটার অনেকটাই তোমার নিজের হাতে।
** খুব খেয়াল করলে দেখবা, এই লিখাটা অনেক জেনেরিক করে লিখা। লেভেল ২ এর একজন স্টুডেন্টকে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং পেশা ছাড়াও রিসার্স বা অন্য কিছু নিয়ে উৎসাহ দিতে চাইলেও এই লিখাটা ব্যবহার করা যাবে। ভাল সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়াররা ঠিক একই রকম করে জেনেরিক কম্পিউটার সিস্টেম ডিজাইন করতে পারে। Single Responsibility, Manageable code, Reusable system…etc.


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Theme by Ali Han | Copyright 2025 Md Imran Hasan Hira | Powered by WordPress