"We human being, always find a solution, maybe not today, but if you really want to solve a problem, there’s always a way" – Ma Yun @ Stanford, 2013
Monthly Archives: October 2024

নিয়মিত ঘুরাঘুরি আর আয় উপার্জন

by Md Imran Hasan Hira
"নিয়মিত ট্রাভেল ও আয় উপার্জন; দুটিই সমানভাবে কিভাবে করা যায়? অনেকেই ভালো উপার্জন করেন, নিয়মিত অনেকদিনের জন্য ট্রাভেল করেন,ট্র্যাকিং করেন। তারা আসলে কিভাবে উপার্জন করেন?"

যদিও প্রশ্নটা শুনতে অনেক সহজ, এখানে অনেকগুলা কিন্তু আছে। পোস্টের দুইটা লাইনকে স্টেরিওটিপিক্যাল পয়েন্ট থেকে বলি

প্রথম পয়েন্ট হলঃ “নিয়মিত ট্রাভেল ও আয় উপার্জন; দুটিই সমানভাবে কিভাবে করা যায়?”

ঘুরতে টাকা পয়সা লাগে না, এই কথাটা সত্য না। ইউরোপে বেশ কিছু দেশ ঘুরার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সুন্দর সুন্দর জায়গা ঘুরতে কম টাকা লাগে না। ইটালি’র আমালফী কোষ্টের একটা হোটেলের খরচ, কিংবা সান্তরিনি’র নীল সাদা কেভ হাউজ অথবা রোমের কলোশিয়ামের এন্ট্রি টিকেট কোনটাই সস্তা না। আবার এটারও অন্য সাইড আছে। সান্তরিনি’র নীল সাদা কেভ হাউজ এর কাছাকাছি ডরমিটরি হোটেল তুলনামূলক অনেক সস্তা। প্যারিস সিটি সেন্টারের থেকে মেট্রোতে ৩০/৪০মিনিট দূরত্বে হোটেল তুলনামূলক অনেক সস্তা। ঘুরতে গেলে কেউ চারদিন ট্রিপের তিনদিনই হোটেল সুইমিং পুলে কাটায়, কারও কাছে হয়ত ৪/৫ স্টার হোটেলের সুমিং পুলের থেকে রাস্তা ধরে হাঁটতেই ভাল লাগে। কেউ হয়ত চার দিন ট্রিপের প্রতি রাতেই ভাল রেস্টুরেন্টে ডিনার করবে, কেউ হয়ত তিনদিন টার্কিস সস্তা মজার ডোনার খেয়ে একদিন দামী রেস্টুরেন্টে ডিনার করবে। কেউ হয়ত ১৫ হাজার টাকা খরচ করে এক ঘণ্টার পশ বোট রাইড দিবে, কেউ হয়ত এক হাজার টাকায় পাহাড়ের হাইকিং শেষে পেনিন্সুলাতে বসে সুর্যাস্ত দেখবে।

ট্রাভেল এর সাথে আয় উপার্জনের একটা ভাল সম্পর্ক আছে। কারণ ট্রাভেল এর খরচ তো কাউকে না কাউকে দিতে হবে। বুয়েটীয়ান একজন ১২ হাজার টাকার দুইটা টিউশনি কড়ায়ে মাসে ২৪হাজার টাকা পেলে, সেই টাকায় চাইলে প্রতি মাসেই ট্রিপ দিতে পারবে। বছর শেসে দেশের বাইরেও ট্রিপ কোন ব্যাপার না। এটা করবে, কারণ হলের সীট ভাড়া একেবারেই নগণ্য। কিন্তু সেই একই ছেলেকে যদি আজিমপুরে একটা বাসা নিয়ে থাকতে হত, তাহলে ২৪হাজার টাকার ১০ হাজার টাকা চলে যেত বাসা ভাড়ায়। তখন মাসে মাসে ট্রিপ দেওয়া একটু কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু আবার সেই ছেলেরই যদি অলরেডি ঢাকাতে ফ্যামিলি থাকে, তাইলে আবার বাসা ভাড়া বেচে গেল।

দিনশেষে নিজের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটানোর পরে বাজেট থাকলে মানুষ ঘুরাঘুরি করে। কিন্তু এটারও আবার ব্যাতিক্রম আছে। যেমন কিছু কিছু মানুষের ঘুরাঘুরি করাটাই একটা বেসিক চাহিদা। শুনতে কঠিন শুনালেও এই ব্যাপারে উপার্জন ক্লাস বিভাজন জিনিসটা খুব প্রকট। উপার্জন বেশী হলে ঘুরাঘুরির প্যাটার্ন এক রকম হবে। উপার্জন কম হলে রমনা পার্ক ঘুরেই খুশি লাগবে। এই পয়েন্টের সামারি হইল নিয়মিত ট্রাভেল ও আয় উপার্জন, দুটিই সমানভাবে সবসময়ই করা যায়, কিন্তু ট্রাভেলের পছন্দ আর উপার্জন দুইটা মিলে ফাইনাল কি কি কতোটুকু ঘুরাঘুরি হবে, সেটা ঠিক করে দেয়।

এবার আসি সেকেন্ড পয়েন্টেঃ “অনেকেই ভালো উপার্জন করেন, নিয়মিত অনেকদিনের জন্য ট্রাভেল করেন,ট্র্যাকিং করেন।”

এই লাইনের ভিতরে একটা বিশাল ট্র্যাপ আছে। সেটা হল, শুনা কোথায়, কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার পোষ্ট দেখে কে কোন ক্যাটাগরি’র সেটা অনুমান করা ঠিক না। তার থেকেও বড় কথা হল, সেই পোষ্ট দেখে নিজের সাথে কম্পেয়ার করাও ঠিক না। ট্র্যাপ বলছি কারণ কম্পেয়ার না করতে চাইলেও, আশেপাশে অনেকে করছে, এই জিনিসটা এক ধরনের পিয়ার প্রেশার তৈরী করে। এটা একটা সোশ্যাল স্ট্যান্ডার্ড সেট করে দেয়। যেই স্ট্যান্ডার্ড এর বেইজ হয়ত ভুল অনুমানের উপর চিন্তা করা। এটার অনেক কারণের মধ্যে কয়েকটা হল

১। ঘুরাঘুরি করতেছে আর ভাল ভাল ছবি দিতেছে মানেই অনেক টাকাপয়সা উপার্জন করতেছে, এমন না।
২। ঘুরাঘুরি করতেছে না মানেই ভাল উপার্জন করতেছে না, এমন না।
৩। ট্যুর দেখে অনেক উপর্জন করে মনে হলেও, সেটা হয়ত শুধু নিজের উপার্জন না। হয়ত ডাবল ইনকাম ফ্যামিলি। আবার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া উপার্জনও হতে পারে।
৪। উত্তরাধিকার সূত্রে যে শুধু উপার্জনই হতে হবে এমনও না। হয়ত বাবা/মা এতটাই এস্টাব্লিষ্টড যে ছেলে মেয়ের উপর নির্ভরতা নাই। হয়ত মাসিক খরচের পিছুটান নাই।
৫। মাসে কি পরিমাণ খরচ হবে, সেটার প্রেডীক্টাবিলিটি কোন শহরে বাস করতেছে সেটার উপর ডিপেন্ড করে। ইউরোপের লাইফস্টাইলে প্রেডীক্টাবল খরচের মধ্যে ট্যুরের প্লান করা সহজ। কিন্তু ঢাকার লাইফস্টাইলে মান্থলি খরচ সবসময় প্রেডীক্টাবল না।

“অনেকেই ভালো উপার্জন করেন, নিয়মিত অনেকদিনের জন্য ট্রাভেল করে” , এই কথাটার “অনেকেই” অংশটা অনেক আপেক্ষিক। এই গ্রুপের যারা মেম্বার, তাদের নেটওয়ার্কও বুয়েটিয়ানদের সাথে হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর বুয়েটিয়ানদের বেশিরভাগই তাদের সমসাময়িক অন্যান্যদের থেকে ভাল বেতনের চাকরীতে থাকবে, এটাও স্বাভাবিক। এখন নেটওয়ার্কের বেশিরভাগই যখন নিয়মিত ঘুরাঘুরি করতেছে, সেটাও স্বাভাবিকই লাগা উচিত, কারণ এই স্যাম্পল সেটের বেশিরভাগই উচ্চ উপার্জনশীল ক্লাস ক্যাটাগরি’র, যারা ফাইনানশিয়ালি স্ট্যাবল। ফাইনানশিয়ালি স্ট্যাবিলিটী ব্যাপারটাও হয় নিজের উপার্জন, না হয় জামাই বউ দুইজনের উপার্জন, না হলে উত্তরাধিকার সূত্রের উপার্জন দিয়ে হচ্ছে। ঘুরাঘুরির টাকা তো কোন না কোন গৌরী সেনের পকেট থেকেই দিতে হবে।

সবশেষে বলব, ঘুরাঘুরি হইল একটা লাইফস্টাইল। এই লাইফস্টাইল এর আবার অনেক ছেলেপেলে ক্যাটাগরি আছে – পশ ঘুরাঘুরি, হাইকিং ঘুরাঘুরি, স্ট্রিট ট্রাভেলার ঘুরাঘুরি, রেস্টুরেন্ট ঘুরাঘুরি। সেই ছোট ক্যাটাগরির আবার নাতিপুতি ক্যাটাগরি আছে – পশ গাড়িতে ঘুরাঘুরি, পশ হোটেলে ঘুরাঘুরি, সিরিয়াস হাইকিং ক্যাম্পিং, পাহাড়ে রেগুলার ক্যাম্পিং, স্টুডেন্ট বাজেট ঘুরাঘুরি। সব লাইফস্টাইল লিড করতে ভাল উপার্জন লাগে এমন না। যার ঘুরাঘুরি’র লাইফস্টাইল যত টাকা ডিমান্ড করে, তার সেরকম উপার্জন+সাপোর্ট থাকলেই হবে, এটাই।


Tu hi meri shab he

by Md Imran Hasan Hira

২০০৫ এর কথা, চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হইছি আমরা চট্টগ্রাম নৌবাহিনী স্কুল থেকে ১১ জন। সবার আব্বুর চাকরি নেভী ঘাটীতে হওয়ায় আমাদের সবার বাসাই নেভি স্কুলের আশেপাশে। আলাদা আলাদা যাওয়ার থেকে বন্ধুরা একসাথে যাওয়ার জন্য মাঝে মাঝে আমরা পুরো টেম্পুই রিজার্ভ করে ফেলতাম। আমাদের এতগুলা মানুষকে নিয়ে টাইগার পাস এসে টেম্পু আর উঠতে পারতোনা। হঠাত হঠাত দুই একজনকে নেমে হেটে ব্রিজ এর মাঝে পর্যন্ত এসে তারপর আবার টেম্পুতে উঠা লাগত।

কলেজের ক্লাস শেষ করে ফেরার পথে হইত আরেক ঝামেলা। কলেজের সামনে থেকে টেম্পুতে উঠাই প্যারা, তার পর রিজার্ভ তো করাই যাবে না। প্রায়ই আমরা সিএনজি তে সাতজন উঠে পরতাম। সমস্যা করত টাইগার পাস এর ওখানে পুলিশ মামা। এক সিএনজিতে নাকি সাতজন উঠা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধ ঢাকতে এমনভাবে সিটীং এরেঞ্জ করা হইত, যাতে বাইরে থেকে বুঝা না যায় ভিতরে কয়জন বসছে! বন্ধুদের কয়েকজন এর কাছে ছিল সেই সময়কার বিখ্যাত নকিয়া কিংবা বেনকিউ সিমেন্স মোবাইল।

মাঝে মাঝে গনি বেকারী পর্যন্ত হেটে এসে তারপর টেম্পুতে উঠে জামালখান রোডের উপর দিয়ে আজিজ স্টেডিয়াম পার হয়ে লালখান বাজার ইস্পাহানী সার্কেল এঁর সামনে নেমে, সেখানে বাস ধরে আবার নেভি হাসপাতাল গেট। তবে গনি বেকারি থেকে টেম্পু না পাওয়া গেলে শেষ ভরসা হিসেবে জামালখান রোডের পর চেরাগির পাশ দিয়ে ডিসি হিল হয়ে নিউ মার্কেট, সেখান থেকে বাস।

অই সময়টায় এফ এম রেডিও ছিল তুঙ্গে। নিউ মার্কেটের সামনে সব হকার দোকানে এফ এম রেডিও ঝুলত। রেডিও শুনার ঝোঁক ছিল না বিধায় আমি অলওয়েজ এই রেডিওগুলার দিকে তাকায় থাকতাম আর চিন্তা করতাম এইগুলা কারা কিনে! বিভিন্ন আকৃতি আর ডিজাইনে ভরপুর সেই এফএম রেডিওগুলা দেখতে দেখতে রাস্তা পার হয়ে যাইত। আর রাস্তায় রাস্তায় বাসে ঘাটে হাই ভলিউমে চলত এই গান।

আমি বাসায় থাকা অবস্থায় বাসায় ডিশ চ্যানেল ছিলনা। যখন কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে, তখন একটা ভিসিডি প্লেয়ার কিনা হইল। সেই ভিসিডি প্লেয়ার এ দেখার জন্য আব্বু মাঝে মাঝে বাংলা ছায়াছবি’র ডিস্ক ভাড়া করে আনত। সারা জীবন ক্যাসেটে রবীন্দ্রসঙ্গীত, আধুনিকসঙ্গীত, পল্লিগীতি আর সাথে সোলসের কিছু গান শুনা আমি শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের গান শুনার হিড়িকে যোগ দিতে একটা সিডি কিনলাম। আমার প্রথম কেনা সিডি/এম্পিথ্রি – ইমরান হাশমি আর হিমেশ রেশমিয়া’র ৩০০ গানের কম্বিনেশন! সিডি চালু করলেই শুরু হইত এই গান দিয়ে। এত পরিমাণ এই গান শুনা হইছে, এখন এই টিউন শুনলেই মাথার মধ্যে অটোমেটিক প্রায় বিশ বছর আগের স্মৃতিগুলা হিট করে। হলি শুট! এত বছর হয়ে গেছে!


Theme by Ali Han | Copyright 2025 Md Imran Hasan Hira | Powered by WordPress