"We human being, always find a solution, maybe not today, but if you really want to solve a problem, there’s always a way" – Ma Yun @ Stanford, 2013
Category Archives: Story

রেজওয়ান সাহেব আর জাদুর বাক্স

by Md Imran Hasan Hira

(এড়িয়ে যাবেন না, আর যারা এই মেসেজটি পাঁচজনকে ইনবক্সে না পাঠাবে, তারা আগামী দিনে সব টাকা পয়সায় লস খাবে :p )

গত সপ্তাহে রেজওয়ান সাহেব হাটতে হাটতে একটা বাক্সে উষ্টা খেলেন। বাক্সটা দেখে মনে হইল জাদুর বাক্স টাইপ। তুলে বাসায় নিয়ে আসলেন, পরিস্কার করে ওটাতে একশ টাকার একটা কচকচে নোট রেখে দিলেন। পরের দিন বাক্স খুলে দেখেন একশ টাকার দুইটা নোট। তাজ্জব বেপার।

বাক্সর মধ্যে টাকা রাখলে পরের দিন সেটা দুইগুন হয়ে যায়। বাহ, মজা তো।

তারপর একশ টাকার নোট দুইটা আবার বাক্সর মধ্যে রেখে দিল। তিন নাম্বার দিন দেখে সেখানে পাঁচশ টাকার নোট। মানে ডাবলের থেকেও বেশী। কেমনে কি! বউরে জিজ্ঞেস করলেন, বউতো অবাক! চাইর নাম্বার দিন এক হাজার টাকার নোট হয়ে গেল। লোকটা হিসাব কনফার্ম করার জন্য, ছেলের মাষ্টারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন এইভাবে টাকা বাড়তে থাকলে কতদিনে কত টাকা হবে। হিসাব করে দেখা গেল, বেশীদিন না, বিশ পঁচিশ দিনেই লাখপতি হয়ে যাওয়া যাবে।

এই খুশীতে রেজওয়ান সাহেব কাওরান বাজারে মাছের আরতে গেলেন, আজকে বড়সর একটা রুই মাছ কিনে বাসার সবাই মিলে খাবেন। মাছের বাজারে ঘুরতে ঘুরতে একটা রুই মাছ পছন্দ হইল। সাত কেজি ওজনের রুই মাছ। জীবনে এত বড় রুই মাছ কখনও কিনেন নাই। মাছ কিনে দোকানদারকে কাটতে দিলেন। এর মধ্যে পাশ থেকে এক লোক বড় করে দিল এক হাঁচি রেজওয়ান সাহেবের একেবারে মুখের উপর। রেজওয়ান সাহেব লোকটা ভাল মানুষ। যদিও চারদিকে করোনার ছড়াছড়ি। উনি অবশ্য এগুলাতে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না। আল্লাহ চায় তো মারবেন, আল্লাহ চায় তো বাঁচাবেন। যাই হোক, বাজারের হাঁচি কাশীর যন্ত্রণায় তাড়াতাড়ি রুই মাছ নিয়ে বাসায় আসলেন।

ওইদিনের পর থেকে রেজওয়ান সাহেবের একটু জ্বর জ্বর ভাব। হাল্কা কাশিও আছে। টিভিতে বলতেছে এই সমস্ত লক্ষণ থাকলে বাড়ীর বাইরে না বেরে হতে। কিন্তু আজকে আবার শুক্রবার, জুম্মার নামাজ কি বাসায় বসে পড়া যায়! জ্বর শরীর নিয়েই কোন মতে গোসল করে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। দুইদিন পর রেজওয়ান সাহেবের অবস্থা বেগতিক দেখে পরিবারের লোকজন উনাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। ডাক্তাররা টেস্ট করার পর বলল যে রেজওয়ান সাহেব করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। আয়হায়, এখন কি হবে! এই ভাইরাসের তো এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাক্সিন নাই। এইদিকে বাক্সের মধ্যে টাকা কিন্তু বাড়তেছে। রেজওয়ান সাহেবের স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে ডাক্তারকে বললেন “ডাক্তার সাহেব, যত টাকা লাগে নেন, তবুও একটা ভ্যাক্সিন দেন”। ডাক্তার সাহেব দেশের সেরা মেডিক্যাল কলেজ থেকে পড়াশুনা করা, অনেক বড় ডিগ্রীওয়ালা ডাক্তার। কিন্তু তারপরও উনাকে বলতে হইল, “দুক্ষিত, আমাদের কাছে এই রোগের কোন চিকিৎসা নাই। আপাতত আমরা ইমার্জেন্সিতে নিয়ে রাখছি, বাকিটা আল্লাহর হাতে”।

হাসপাতালে আরও পাঁচদিন করোনা ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত রেজওয়ান সাহেব বাঁচতে পারলেন না। ভাইরাসের আক্রমণে মারা গেলেন। এদিকে রেজওয়ান সাহেবের স্ত্রী, বাক্স খুলে দেখেন অনেক টাকা। এত টাকা দিয়ে কি হবে, যেখানে মানুষটাই নাই।

রেজওয়ান সাহেবকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হল। মারা যাবার পর তার রুহ বেশ খুশী। সারা জীবন নামাজ কালাম পড়ে আসছেন। কখনও কারও ক্ষতি করেননাই। করোনার মত রোগ নিয়েও জীবনের শেষ জুম্মা মসজিদে পড়ে আসছেন। ঝামেলা বাধল হাশরের ময়দানে যখন হিসাবের খাতা খুলা হল।

ডান কাঁধের ফেরেশতা বলল – “এই লোক জীবনে অনেক পুণ্য করেছে।” একে একে সব পুণ্যকাজের বর্ননা দিল। তারপর যখন বাম কাঁধের ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করা হল, সে বাধা দিয়ে বলল – “এই লোক সারাজীবন ভাল কাজ করছে। শুধু শেষে এসে নিজের করোনা ভাইরাস দিয়ে শত শত লোককে আক্রান্ত করেছে” । রেজওয়ান সাহেব তখন বলল – “আমি তো জানতাম না” ।বাম কাঁধের ফেরেশতা তখন বলবে – “কি জানতা না, তোমার এলাকার ডাক্তার বলছিল তোমাকে করনার জ্বর কাশি নিয়ে মসজিদে না যাইতে, বল বলছিল কিনা!” । রেজওয়ান সাহেব উত্তর দিলেন – “তা বলছিল”। ফেরেশতা ধমক দিয়ে বলল – “তাহলে এত সতর্ক করার পরেও রোগ নিয়ে মানুষজনের মাঝে গেছ কেন?” রেজওয়ান সাহেব বললেন – “আমি তো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গিয়েছি, আমাকে মাফ করে দেওয়া যায়না?” তখন উত্তর আসবে – “বারবার বলা সত্ত্বেও নিজের করোনা ভাইরাস বাকিদের ভিতরে ছড়িয়ে দিয়ে এতগুলো মানুষের মৃত্যু ঘটানোর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।” শেষ পর্যন্ত রেজওয়ান সাহেব বেহেস্তে যেতে পেরেছিলেন কিনা, সেটা জানার সৌভাগ্য হয়নি। কারন তার আগেই ঘটনা বর্ননাকারী নিজেই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চলে গিয়েছেন।

যারা এতদূর পড়ে আসছেন, তাদের জন্য

  • আগামী কয়েক সপ্তাহ যতটুকু সম্ভব মানুষজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। রোগশোক থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য এটাই দরকার এখন। প্যানিক হতে হবে এমন না, তবে নিজেকে সেফ রাখতে তো দোষের কিছু নাই।
  • ঘরের বাইরে গেলে যত কম পারা যায় বিভিন্ন জিনিস ছোঁয়া থেকে বিরত থাকুন।* বাইরে থেকে আসার পর সাবান/স্যানিটাইজার দিয়ে (মিনা কার্টূনের মত) ভাল করে হাত কনুই পর্যন্ত পরিষ্কার করুন।
  • আপনার জ্বর, কাশি থাকলে সেটা যাতে বাকিদের মাঝে ছড়াতে না পারে, তার জন্য আপনাকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু শুধু করোনা ভাইরাসের জন্য বেহেস্তে যাওয়ার সুযোগ হেলায় হারাবেন না।
  • যারা বলছে এগুলা কোন সমস্যা না, তাদেরকে বুঝান যে রোগ শোক থেকে দুরে থাকাটাও পবিত্রতার অংশ।

বাসন্তী-ফুল

by Md Imran Hasan Hira

: কিরে, নিচের দিকে তাকিয়ে কি দেখিস?
: শাড়ির কুচি লম্বা হয়ে গেছে মনে হচ্ছে, একটু দেখে দাও তো ঠিক আছে কিনা।
: ভাল করে দাড়া, দেখি। কই, ঠিকই তো আছে। এই শাড়ি কার কাছ থেকে নিছিস?
: আম্মুর শাড়ি।
: আচলটা সুন্দর, আন্টির পছন্দ আছে। চল ওইদিকে যাই, পোলাপান আছে।
: আর কিচ্ছুক্ষণ বসি আপু, প্লিইইজ
: এইখানে কি পাইছস?
: রোদ পড়তেছে, ভালই তো লাগতেছে।

#বসন্ত_বাতাসে
#না_হয়_একটু_দেরীই_হল


আজ আফসানা’র ফ্লাইট

by Md Imran Hasan Hira

গুরাহ রাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। খুব একটা বেশী বড় না। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স এর বিমান সাই সাই করে উড়িয়ে নিয়ে চলে আসছে। অনেকটা হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর বাসের মত। জাভা সাগরের উপর দিয়ে আসার সময় অনেক গুড়ি গুড়ি নৌকা চোখে পরছে। বিমান নামার আগে পাইলট এর কথামত কোমড়ের দড়ি(!) শক্ত করে বেধে নিয়েছিল আফসানা। ল্যান্ড করার পর সেটা আলগা করে নিল। নামার আগে চেক করে নিল পাসপোর্ট সাথে আছে কিনা। এখন প্রথমেই যে কাজ করতে হবে, ডলার ভাঙ্গিয়ে রুপিয়াহ বানাতে হবে। এয়ারপোর্ট এর ভিতরে একটা মানি এক্সচেঞ্জ আছে। কিন্তু ওইটাতে যে পরিমান ভিড়, তাতে সারাদিন লাগবে মনে হচ্ছে। আস্তে আস্তে এক্সিট দিয়ে বের হয়ে বাইরে আর একটা এক্সচেঞ্জ খুঁজে বের করল। এখানকার কারেন্সির যা অবস্থা, মানি এক্সচেঞ্জ করে তো সে প্রায় কোটি টাকার মালিক হয়ে গেল।  

দেনপাসা শহরটা বেশ বড়ই। কি অদ্ভুত একটা নাম, শহরের নাম কেউ এমন দেয় ! দেনপাসা হচ্ছে বালির রাজধানী। ইন্দোনেশিয়ার ট্যুরিস্টিক এলাকাগুলোর মধ্যে বালি দ্বীপ একেবার টপের দিকে। জিওগ্রাফিকাল লোকেশন চিন্তা করলে এই দ্বীপের আবহাওয়া মোটামুটি মনসুন ক্লাইমেট এর মধ্যে পরে। সতের হাজার দীপের একটা দেশ, ম্যাপের উপরে ডানে বামে যেখানে তাকাই, সেখানেই খালি দ্বীপ। মনে হয় পানির মধ্যে থেকে এক গাদা ব্যাং মাথা উঁচু করে তাকিয়ে আছে। সম্ভবত বেশী বেশী ভূমিকম্প হবার কারনেই এমন হয়ে গেছে, কে জানে! 

আফসানা’র থাকার জায়গা হচ্ছে পুলম্যান রিসোর্ট। ন্যানোটেকনোলজির একটা কনফারেন্সে এসেছে ও। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে এইখানে ওদের কাজ একসেপ্ট হয়ে যাবে, ভাবতেই পারেনি। কনফারেন্স অথরিটি থেকে ও যখন কনফার্মেশন ইমেইল পেয়েছিল, কিছুক্ষণ হা করে ছিল। থিসিস সুপাভাইজরও বলল প্রেজেন্ট করে আস। এই কনফারেন্সটা প্রতিবার অনলাইনে করে। এবারই প্রথম ফিজিক্যাল ভেন্যুতে আরেঞ্জ করতেছে। সমুদ্র সৈকতের একেবারে পাশে। এয়ারপোর্ট থেকে একটা ট্যাক্সি নিয়ে রিসোর্টে চলে এসেছে সে।

তাড়াহুড়া করে কাজকর্ম গুছাতে গিয়ে ট্রিপের ব্যাপারে তেমন কোন প্লানই করতে পারেনি আফসানা। কনফারেন্স তিনদিনের। যেদিন শেষ, সেদিনই রিটার্ন করলে টিকেটেরে দাম বেশী দেখে দুইদিন পরের টিকেট নিয়েছে ও। ট্রাভেল এজেন্সি থেকে বলল দুইদিন এক্সট্রা থাকা লাগলেও, সব মিলিয়ে এটা ভাল ডিল। খারাপ হয়নাই, লাস্টের দিন এমনিতেও ওর প্রেজেন্টেশন নাই, সব মিলায়ে এক্সট্রা তিন দিন ফ্রি পাওয়া যাবে। হোটেলে পৌঁছে, ফ্রেশ হয়ে পেপারের কাজকর্মে বসে গেল। 

বিকালে হতে হতে খেয়াল করল পোস্টার প্রিন্ট করতে হবে। যতটুকু এডিট করেছে, সেটাই এখন প্রিন্ট না করালে আবার দোকান খোলা পাওয়া যাবে কিনা সেটাও একটা কথা। আশেপাশে প্রিন্ট করার জায়গা খুঁজতে গুগল ম্যাপে সার্চ দিল, কিছু দোকানের নাম দেখাচ্ছে। কোয়ালিটি কেমন হবে কে জানে। মোবাইলের ম্যাপে ও কিছুক্ষণ আশেপাসের জায়গা গুলো ব্রাউজ করে নিল, তাইলে নেট না থাকলেও ক্যাশ থেকে ম্যাপটা কাজ করবে। পেনড্রাইভে পোস্টারের ফাইলগুলা সেভ করে আফসানা বের হয়ে গেল হোটেল থেকে। 

প্রথম যে দোকানটা দেখেছিল ম্যাপে, সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর আর একটা দোকানে দেখল প্রিন্ট করা যায়। ওটাতে ঢুকল আফসানা। ঢুকতে ঢুকতে পাশ থেকে শুনল একজন বাংলায় ফোনে কথা বলতেছে, একপেশে কথা যদিও।  
– হ্যালো মামা, শুনতে পাচ্ছেন? মামা, আপনাদের বাসা নাম্বার যেন কত?
– আচ্ছা, আমি আর একবার বলি ঠিকানা, ঠিক আছে কিনা দেখেন তো।
– না মামা কিছু না, এমনেই জিজ্ঞেস করতেছি।
– জি আমি ভাল আছি, ইজতেহাদ আর ইরতিদা কেমন আছে?
– জ্বি মামা, এখন রাখি। দোয়া করবেন।

ফোনে কথা বলছিল যে, কিচ্ছুক্ষণ পর সে কাউণ্টারে এসে দুইটা পোষ্টকার্ড নিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করল যে এই দুটো বাংলাদেশে পাঠাতে কত খরচ পরবে। আফসানা একটু ওয়েট করল তার পোষ্টকার্ড পাঠানো শেষ পর্যন্ত, তারপর আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল – 
– আরেহ ভাই, আপনি বাংলাদেশী নাকি ?
– হ্যা, আপনি?
– বাংলা শুনে তো বুঝতেই পারছেন।
– হা হা, সেটা ঠিক।  
– ঘুরতে এসেছেন?
– হ্যা, আপনি?
– আমি একটা কনফারেন্সে আসছি। পোস্টার প্রিন্ট করাব, এইজন্য ভাল একটা দোকান খুজতেছি। 
– কিসের পোস্টার?
– কনফারেন্সের কাজকর্ম আর কি। 
– উড়ি বাবা! গবেষনা কাজকর্ম, সে তো অনেক কঠিন কাজ।
– কি বলেন, আমার কাছে তো এখন প্রিন্ট করানোটা আরও কঠিন কাজ মনে হচ্ছে। 
– হুম, পোস্টারের জন্য তো বড় প্রিন্টার লাগবে।
– হ্যা।
– দাঁড়ান দেখি। 
কিছুক্ষন গুগলে সার্চ দিয়ে দুইটা দোকানের সাজেশন দিল। তারপর আফসানাকে মোবাইলে দেখিয়ে দিল কিভাবে যেতে হবে।

কনফারেন্সের মেইন দুইদিন বেশ দৌড়াদৌড়ি গেছে। প্রতিদিনই হোটেলের রুমে আসতে আসতে অনেক দেরী। আর টায়ার্ড হয়ে কোনমতে ফ্রেশ হয়ে ঘুম। শেষদিন সবকিছু গুছিয়ে বিকালের আগে যা একটু সময় পাওয়া গেছে। আফসানা ভাবল বীচ থেকে ঘুরে আসবে। 

রীসোর্ট থেকে বেরিয়েই সমুদ্র সৈকত। হাটতে হাটতে লেগিয়ান বীচের ধারে এসে পড়ছে। আকাশটা বেশ পরিষ্কার থাকায় সমুদ্রের পানি নীল হয়ে গেছে। 
– আরেহ আপনি এখানে ?
– হ্যা, আমি কাছেই থাকি। 
– থাকেন মানে?
– থাকি মানে, এখানে একটা airbnb নিয়ে থাকি। 
– আপনি না ঘুরতে এসেছেন? 
– হ্যা, ঘুরতে আসছি। ঘুরতে আসলে কি থাকা যাবেনা?
– না না, তা না। কতদিন ধরে আছেন এখানে? 
– সপ্তাহখানেক হল এসেছি। মাসখানেক থাকব।
– এতদিন ধরে থাকবেন?
– আমি আসলে এখান থেকে কাজ করি। আমার জবটা রিমোট জব। এই জন্য একটু সুবিধা। 
– আচ্ছা। আপনি তো বেশ আরামে আছেন। জব করার উছিলায় ঘুরাঘুরি করতেছেন। 
– সব সময় তো ঘুরাঘুরি হয়না। আজকে কাজ করতে করতে একটা জিনিস মিলতেছিলনা, এই জন্য মাথা খালি করতে হাঁটতে বের হইছি। আপনার প্লান কি? 
– তেমন স্পেসিফিক কোন প্লান নাই। এখানে কিছুক্ষণ থাকব। তারপর উলুয়াতু মন্দিরের দিকে যাব। আপনি গেছেন নাকি?
– হ্যা, গিয়েছিলাম গত সপ্তাহে। জায়গাটা সুন্দর অনেক। 
– আমিও শুনেছি এটা নিয়ে, দেখি কেমন লাগে। 
– আপনার কনফারেন্স কেমন হল? 
– ভালই হয়েছে। 
– কিছু মনে করবেন না, আপনি কোন ভার্সিটিতে পড়াশুনা করতেছেন? 
– বুয়েট থেকে। 
– হা হা 
– হাসতেছেন কেন?
– আপনি কোন ব্যাচ?
– আমরা কেবল পাস করে বের হয়েছি। 
– আচ্ছা, আমি ‘০৭ ব্যচ। 
– আরেহ তাই নাকি ভাইয়া। 
– (মনে মনে) ধুর এভাবে ভাইয়া বলে ফেলল ! (অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রেখে) বাহ, এখন কি মাস্টার্স করতেছ? তুমি করে বললাম। কিছু মনে করনাই তো! 
– আরেহ না না, সমস্যা নাই, আমরা তো ছোটই। হ্যা, মাস্টার্সের লাস্ট সেমিস্টার চলতেছে। কিভাবে কিভাবে যেন পেপারটা আক্সেপ্টেড হয়ে গেল। তাই এখানে আসছি। 
– কিসের উপর পেপার ছিল?
– এইত, ন্যানোনিডল নিয়ে। আমরা আন্ডারগ্রাড এ থাকতে পার্টটাইম কাজ করেছিলাম একটা কোম্পানিতে। ওখানে কাজ করতে গিয়ে একটা টীমের সাথে পরিচয় হয়। ঢাকা ভার্সিটির একটা টিম আর বুয়েট মিলে এই রিসার্চটা করতেছে। টপিকটাতে বেশ মজা পেয়ে যাই। তারপর সেটাই মাস্টার্সের প্রোজেক্টে এ সিলেক্ট করেছিলাম।
– ভাই রে ভাই, কিভাবে পার!
– কই আর পারলাম, এত পড়ালেখা করে শেষ পর্যন্ত সুই বানাচ্ছি।
– সুইকে সুই বলে ছোট করে দেখার কিছু নাই। 
– আপনি মাষ্টার্স করছেন?
– নাহ, আমি স্বল্পশিক্ষিত মানুষ, বেশী লেখাপড়ার সুযোগ হয়নাই :p

হাটতে হাটতে ওরা লাবনী পয়েন্ট থেকে একেবারে কলাতলী বীচে চলে এসেছে। ধুর, কি বলতেছি, লেগিয়ান বীচ থেকে কুতা বীচে চলে এসেছে। 
– এই জায়গাটা দেখতে অনেকটা কলাতলী বীচের মত। 
– সেটা আবার কোন বীচ? 
– কক্সবাজারের একটা বীচ। আপনি কক্সবাজার গিয়েছেন? 
– গিয়েছিলাম মনে হয় একবার। সে তো অনেক আগে। বুয়েট থেকে বের হবার পরপর মনে হয়। ও হ্যা মনে পড়েছে, কলাতলী বীচ। সবচেয়ে ময়লা বীচটা?
– তা অবশ্য ঠিক বলছেন। মানুষজন বেশী বেশী গিয়ে ময়লা করে ফেলেছে।
– এখানে সমুদ্রের ডেপথ একটু বেশী থাকার জন্য সমুদ্র সৈকত খুব একটা প্রশস্ত না। কলাতলীর ওখানে মানুষজনকে অনেক দুর পর্যন্ত যেতে দেখছি মনে হয়।
– হ্যা। এখানের বীচও তো কম ময়লা না। এর থেকে সেন্ট মারটিন এর বীচ অনেক সুন্দর। 
– সেন্ট মারটিন গিয়েছিলাম আমাদের র‍্যাগ ট্যুরে।
– তাই নাকি?
– হ্যা, সেই ট্যুর। ওই সময়টা পুর্নিমা ছিল। আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে বীচেই এক রাত পার করে দিছিলাম। আমার অবশ্য খুব বেশী কিছু মনে নাই। ব্যাচের কয়েকজন সবকিছু আরেঞ্জ করছিল দেখে আমরা বাকিরা দিব্যি আরামে ট্যুর দিছি। তখন আসলে বুঝতাম না যে ঘুরাঘুরি করতে কত মজা। 
– ঘুরাঘুরি করতে কার না ভাল লাগে! 
– ভাল লাগেনা এমন না। মানে ভার্সিটীতে থাকতে ঘুরার অনেক সময় ছিল, পোলাপান ছিল, ঘুরিনাই।
– ঘুরেননাই কেন?
– হলে বসে ঝিমাইছি। যা মিস হয়ে গেছে, গেছে। এখন সেগুলো পোষাতে হবে :p তোমাদের র‍্যাগ ট্যুর কই ছিল? 
– সেন্ট মারটিন এই। আমি অবশ্য যেতে পারিনি। 
– কেন?
– এমনেই
– এমনেই মানে! কেউ কি ইচ্ছা করে র‍্যাগ ট্যুর মিস করে নাকি!
– না, তা না।
– আরেহ ধুর, কি যে বলেন!
– র‍্যাগ ট্যুরে না গিয়ে করছ কি তাহলে?
– বসে বসে গান গাইছি। 
– কি গান?
– আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে
– সেন্ট মার্টিনে তো বন নাই। 
– কে বলেছে নাই, ছেড়া দ্বীপের ওইখানে একটু ঝোপঝাড় আছে, ওটারেই বন হিসেবে ধরেন। 
– হা হা, হইল না, সুন্দরবন গেলে না হয় বলতে পারতা।

আফসানা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল তিনটার মত বাজে। 
– আচ্ছা, আমি এখন উলুয়াতু মন্দিরের দিকে যাব। আপনি যাবেন নাকি?
– যাওয়া যায়, আমার এমনিতেও এখন কাজে মন বসবে না। তার থেকে ওখানে বসে সুর্যাস্ত দেখতে মন্দ হবে না।  

কুতা বীচ থেকে উলুয়াতু মন্দির ট্যাক্সিতে ঘন্টাখানেকের রাস্তা। একা একা গেলে ভালই খরচ পরত। দুইজন হওয়াতে মোটামুটি কমই। চারটার একটু পরে ওরা পৌঁছুল। আজকে সন্ধ্যা হবে সাড়ে ছয়টার দিকে। হাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টার মত সময় আছে।

ঢোকার মুখে টিকেট কাউন্টার। ট্যাক্সি ড্রাইভার টিকেট কেটে দিবে বলে টাকা নিয়ে গেল, একটু পরে আবার ফেরত আসল। কেচাক নাচ নামে একটা নাচ হবে। সেটার টিকেট আলাদা করে বিক্রি করতেছে। দেড় লাখ রুপিয়া। ওরা কিনবে কিনা জিজ্ঞেস করল।
– লাখ টাকার নাচ, দেখবা নাকি? 
– দেখা যায়। আপনি দেখবেন? 
– চল।

দুটো টিকেট কেটে ওরা মন্দিরের মধ্যে ঢুকল। মন্দির খোলা থাকে সাতটা পর্যন্ত। মন্দিরের ভিতরে হাটার রাস্তাটা পাহারের কিনার ঘেঁষে বেয়ে বেয়ে গেছে। একটা জায়গায় মোটামুটি ফাকা দেখে দাড়াল ওরা।  আকাশের রংটা হলুদ আর লালের একটা মিক্স হয়ে গেছে। ওরা যেখানে দাড়িয়েছে, সেটা একটা চুড়া। আসলে পুরো মন্দির এলাকাটাই পাহাড়ের চুড়ায়। ক্লিফ ঘেঁষে রাস্তা বানানো, অনেক খাড়া ক্লিফ। লাফ দিলে ভাল একটা দড়ি ছাড়া বাঞ্জি জাম্পিং হয়ে যাবে। ক্লিফের আশেপাশে কিছুদুর পরপর কাগজী ফুলের ঝোপ। বিকালের হলদে আলোতে আফসানাকে দেখতে অন্যরকম লাগছে। আর তার সাথে পিছন থেকে গোলাপি ফুলগুলো, সব মিলিয়ে আলাদা একটা মায়া কাজ করতেছে। কাগজী ফুল দিয়ে দুটো ঝুমকা বানিয়ে দিলে মানাবে বেশ। মনের অজান্তেই গুনগুন করে একটা সুর চলে আসল –

অই দুর পাহাড়ে, লোকালয় ছেড়ে দুরে
মন কেড়েছিল এক দুরন্ত মেয়ে সেই কবে
হিমছড়ীর বাঁকে

– গান গাচ্ছেন নাকি?
– হ্যা, অনেক বড় শিল্পী তো, প্রতিভা চেপে রাখা যাচ্ছেনা।
– দেখছেন, এই জায়গাটা দেখতে হিমছড়ির মত না?
– আরেহ তাইতো, ঠিক বলছ।
– চলেন, কেচাক এর টাইম হয়ে গেছে। আগে আগে না গেলে ভাল সীট পাওয়া যাবেনা। 

কেচাক নাচ দেখতে এইখানে অনেক লোক আসে। জিনিসটা রামায়ণের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে বানানো। হনুমানের নেতৃত্বে একদল বানর থাকে। বানরের দল রাবনের সাথে যুদ্ধ করে রামকে জিতিয়ে দেয়। প্রায় শখানেকের মত পার্ফরমার। স্টেজ এ ওরা যেখানে বসেছে, সেখান থেকে দুরে তাকালে সমুদ্র। ক্লিফ এর মাথায় একটা “Door of heaven” এর স্ট্যাচু। Door of heaven হল দুইটা বড় কপাটের মত, মাঝখান দিয়ে খোলা। ইন্দোনেশিয়াতে মোটামুটি সব জায়গায়ই এইটার ছোট/বড় ভার্শন দেখা যায়। তো ওইটা বরাবর তাকালে সমুদ্রের উপর সুর্যাস্ত দেখা যাচ্ছে।

নাচের মাঝখানে কয়েকটা মশালে আগুন ধরায়ে দিল। সুর্য ডোবার পরে যখন একটু অন্ধকার হয়ে গেল তখন পুরো ব্যাপারটাতে একটা জংলী ভাব চলে আসল। আদিম যুগে মানুষজন আগুন জালায়ে চারপাশে যেমন নাচত, ওইরকম। সব মিলিয়ে সেট আপটা সুন্দর, ভাল লাগার মত। পুরো সময়টা বেশ ভালই কাটল।

মন্দির থেকে বের হয়ে, ওরা চিন্তা করছিল কোথায় খাবে। একবার চিন্তা করল উলুয়াতুর আশেপাশে কোথাও বসে খাবে। পরে মনে হল একবারে রিসোর্টের কাছে গিয়েই কোন একটা জায়গায় বসবে। একটা ট্যাক্সি করে রওয়ানা দিল কুতা বীচের দিকে। মাঝপথের রাস্তা ঢাকা চিটাগং হাইওয়ের মত, একটু চাপা আর কি। অন্ধকার হয়ে গেছে যদিও, তারপরও দুই পাশে দোকানপাটের লাইটের আলো আছে। কুতা বীচের কাছে আসতে আসতে রাস্তা ফকফকা, দেখে মনেই হচ্ছেনা রাত। অবশ্য এতক্ষণে ওরাও টের পেল পেট খিদেয় চো চো করছে। 

–x–

সুপ্রিয় দর্শকমন্ডলী, এতক্ষণ দেখছিলেন এ সপ্তাহের নাটক “আজ আফসানার ফ্লাইট”। আজকে এতটুকুই রইল। এখন শুরু হবে রাত দশটার সংবাদ 🙂


চিতাবাঘের খামচি

by Md Imran Hasan Hira

আসার আগে, পর্যন্টন কেন্দ্রে একবার ঢু মেরেছিলাম। ওখান থেকে বলেছে, এই জঙ্গল আর এর আশেপাশের এলাকাগুলো অভয়ারণ্য হিসেবে মার্ক করা। তাই যেকোন কিছুই থাকতে পারে। আমরা অবশ্য ওভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। দশ-বার জন মানুষ আছি, প্রত্যেকের সাথেই ধারাল কিছু না কিছু আছে।

এই জঙ্গল নিয়ে রিসেন্ট যত ট্রাভেল ব্লগ আছে, সবগুলাতেই চোখ বুলিয়ে এসেছি। রিসেন্ট টাইমে কেউই তেমন হিংস্র কিছুর দেখা পায়নাই। বনবিড়াল আর হাতিই মোটামুটি সবার চোখে পরে। সর্বশেষ বছর আটেক আগে একজন নাকি একটা বাঘ দেখেছিল। সে কবেকার কথা, সেই বাঘ এতদিনে শিউর মরে ভুত হয়ে গেছে।

পাহাড়ি ট্রেইল ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমরা একেবারে মাথায় চলে আসছি। গাছ গাছালির ভিতর দিয়ে হাঁটতে অবশ্য খারাপ লাগেনাই। তবে শেষের দিকে খাড়া কিছু উঁচু জায়গায় সবার ভালই কাহিল অবস্থা গেছে। এতক্ষণ ধরে হাঁটার পরে কষ্টগুলা, এই জায়গায় এসে সবাই ভুলে গেছে। উপর থেকে দুরে কয়েকটা পাহাড়ের চুড়া দেখা যাচ্ছে। আর মাঝের জায়গাটা ছেড়া ছেড়া মেঘের অংশ দিয়ে ভরা। মনে হয় কেউ হাতে ধরে একটা ছবির উপরে মেঘগুলো বসিয়ে দিয়েছে।

আমরা যে জায়গাটায় আসছি এইখানে বেশ কয়েকটা বড়বড় পাথর আছে। ঠিক করলাম, আজকে রাত এইখান এই ক্যাম্পিং হবে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম, জায়গাটা একটু স্যাঁতসেঁতে। কিন্তু পাথরগুলার সাইড করে বেশ খানিকটা খোলা জায়গা আছে। আমরা কয়েকজন মিলে সেখানটা পরিষ্কার করে তাঁবু বসাতে লেগে গেলাম। তাঁবু সেট করা কঠিন কিছু না। তাঁবুর কাপড় রোল করা থাকে নরমালই। ভাল করে রোল করা থাকলে, সেটা খুলে তাঁবু সেট করতে দু মিনিটও লাগে না।

এর মধ্যে দুইজন লেগে গেল বার-বি-কিউ করার জন্য। মাংসের প্যাকেট কয়েকজন এর কাঁধে অল্প অল্প করে আগে থেকে ভাগ করে দেওয়া আছে, যাতে একজনের উপরে বেশী ভার না পরে। প্যাকেট থেকে ওগুলো বের করে একটা বাটিতে এক করা হল। ওদিকে কিছু ডালপালা দিয়ে আগুণ জ্বালানোর মত করে জড়ো করা হল। যদিও একটু ভিজা ভিজা, তারপরও ব্লোয়ার আর ফায়ার-এনহ্যাঞ্চার থাকাতে আগুণ ধরাতে সময় লাগল না।

বারবিকিউ যতক্ষণে হয়ে এসেছে, ততক্ষণে সবার পেটের অবস্থা চো চো। সারাদিন হাটাহাটির পর ক্ষিদে লাগাটাই স্বাভাবিক। আগুণের উপর থেকে যখন মাংসগুলা এক এক করে নামানো হচ্ছিল, নামাতে যতটুকু সময়, পেটের ভিতরে চালান করে দিতে মনে হয় কোন সময়ই লাগল না :p আর সাথে ছিল পাউরুটী। এর মধ্যে একজন আবার খুশিতে গান শুরু করল। এই রকম আকাশের তারা দেখতে দেখতে আর বারবিকিউ খেতে খেতে গান গাওয়ার বেপারটা অনেকদিন ধরে মিস করতেছিলাম। এবারের ট্রিপে সেই আশাটা পুর্ন হয়ে গেল 🙂

আড্ডা চলল আরও ঘণ্টা খানেক। এর ভিতরে ঘুম পেয়েছে অনেকেরই। ক্যাম্পিং এ বিছানা সেট করে সবাই ঘুমুতে চলে গেছে, আমি কি কারনে যেন একটা পাথরের উপর বসে ঘাস চিবাচ্ছিলাম। হঠাত করে দেখলাম একটা চিতাবাঘ একটা তাঁবুর পাশে ঘুরঘুর করতেছে। ড্যাম ইট! আমি তারায়ে দেওয়াড় জন্য জোড়ে হুস করে শব্দ করলাম। এবং সাথে সাথেই বুঝতে পারলাম, কত বড় ভুল করে ফেলছি।

বাঘটা আসলে চলেই যাচ্ছিল, আমার শব্দ শুনে পিছনে ফিরল। আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে, মনে হচ্ছে কত ভালবাসা। ভালবাসার গুষ্টি কিলাই, আমি পাশে একটা গাছ ছিল, সেটার একটা ডাল বেয়ে উপড়ে উঠার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঝামেলা হইতেছে, ডাল ধরে পা উপড়ে উঠাতে পারছিলাম না, কেমন যেন শক্তি নাই। সারাদিনে ট্র্যাকিং কম হয়নাই। পা আর একটা ডালের উপর উঠাতে পারলেই আপাতত নিচ থেকে বাঘটা আর ছুতে পারবে না।

অনেক কষ্টমস্ট করে গাছে উঠলাম, কিন্তু কিসের কি, চিতাবাঘটাও ওইদিক থেকে আর একটা গাছের একেবারে মাথায় উঠে গেছে। আমার আর বাঘটার মাঝে আরও একটা গাছ আছে। দেখলাম চিতাবাঘটা চেষ্টা করতেছে লাফ দেবার। দূরত্ব যতটুকু, তাতে ভালমতো লাফ দিলে আমার ঘাড়ে এসে পড়ার ভাল সম্ভাবনা আছে।

কি করব বুঝতে পারছিলাম না। চিৎকার করে বাকি সবাইকে ঘুম থেকে তুলাটা ঠিক হবে কিনা, নাকি ওদেরকে দেখে ওদের উপরও চড়াও হতে পারে। বাঘটা এতক্ষণে ভাল একটা পজিশনে দাঁড়িয়ে গেছে। এরপর এদিক সেদিক নড়াচড়া করে সে লাফ দিয়েই দিল। আমি দেখতে পেলাম, বাঘটার মুখ বড় হা করে এগিয়ে আসছে, চোখা চোখা দাঁতগুলো থেকে ঝিলিক আসতেছে। আমার আত্মা ততক্ষণে জমে বরফ হয়ে গেছে। বাঘের সামনের হাতের নখর গুলো স্লো মোশনে আমার গালে খামচি মারার ঠিক আগ মুহুর্তে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত তিনটা বাজে। এখন না ঘুমালে কালকে সকালে ট্রিপের বাস শীউর মিস হবে। ল্যাপটপটা পাশে রেখে, লাইট নিভিয়ে বালিশটা ঠিক করে নিলাম 🙂


সাইকাসের ফুল

by Md Imran Hasan Hira

রুমটার ভিতরে একগাদা বই। থরে থরে সাজানো বই। সেই পুরনো আমলের বই থেকে শুরু করে চকচকে হ্যারি পটার কোনটাই বাদ নেই। জানালা দুটো দিয়ে ভালই আলো আসছে। সকালের কমলা আলো। দেখে মনে হচ্ছে ফটো এডিটরের Warmth ফিল্টার আপ্লাই করে রাখছে। একদিকের দেয়ালে একটা ব্লাকবোর্ডও আছে।

সবাই মিলে হুরমুড় করে ঘরে ঢুকল। সারাদিন এর দৌড়ঝাঁপ এর পরে ফ্রেশ হয়ে এখন একটু রেস্ট নিতে হবে। ওমা, রুমের ভিতর থেকে স্যার বের হয়ে বলল – সবাই রেডি হও, এখন পরীক্ষা! কি আজব, এই স্টাডি ট্যুরে এসেও পরীক্ষা দিতে হবে!

পরীক্ষা দিতে হলে তো চেয়ার টেবিল লাগবে, সেগুলো কই পাব? স্যার বলল, বইগুলো একসাথে করে টেবিল এর মত বানায়ে নিতে। বাইরে করিডোরে এক্সট্রা চেয়ার আছে, সেগুলো ভিতরে নিয়ে আসলে সবার বসার জায়গা হয়ে যাবে। বই দিয়ে টেবিল বানাতে গিয়ে বাধল ঝামেলা। প্রথমে বইগুলোকে একসাথে করে ছোট ছোট স্তূপ করা হল, তারপর Lego সেটের মত করে একটা টেবিল এর কাছাকাছি কিছু একটা বানানো হল। যতটুকু হয়েছে, তাতে দুইপাশে দুইজন বসে লিখতে পারবে।

পরীক্ষা শুরু হল। এত কাছ ঘেষে সবাই বসা, চাইলেই অন্যের খাতার সব দেখা যায়। কবির কি লিখবে বুঝতেছে না। স্যারের মাথায় গণ্ডগোল আছে, ট্যুরের মাঝখানে বসে আর কোন কাজ পায়নাই! যাই হোক, কবির একটু উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করল বেণু কি লিখতেছে। মেয়েটা লিখেই যাচ্ছে, এত কি লিখতেছে! সব কমন পরছে মনে হয়। বলেই বসল – “এই বেণু, কি লিখিস এত!” এই কথা শুনে, স্যার কটমট চোখে ঘুরে তাকাল কবিরের দিকে, আর দিল এক ঝাড়ি। স্যারের ঝাড়ি খেয়ে ঘুম থেকে তড়াক করে উঠল কবির।

এত সকাল সকাল ঘুম ভাঙ্গার কারনে মেজাজ ব্যাপক খারাপ। তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে যাবার আর একটা কারণ আছে। আজকে কি যেন একটা গুরুত্বপুর্ন কাজের জন্য তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েছিল সে। ওহ, মনে পরছে, বেণু দেখা করতে বলেছে। এই ভ্যালেন্টাইন হারামজাদা’র ছুতা দিয়ে মানুষজন এখনকার সময় বাইরে হুশপাশ করার একটা ফন্দি বের করছে। অবশ্য বেণুর সাথে হুশপাশ করতে কবিরের খারাপ লাগেনা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল দেরি হয়ে যাচ্ছে। এখনই না বের হলে সংসদ ভবন যেতে যেতে সময় পার হয়ে যাবে। আর তখন অন্য সমস্যা আছে। বেণুর রাগের ইমপ্যাক্ট ভ্যালেন্টাইনের উপর রাগের থেকে অনেক বেশী। বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখল গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ভেজা পিচঢালা রাস্তার পাশের ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে থাকল। কবিরের বাসা থেকে সংসদ ভবন ঘণ্টাখানেকের হাটার রাস্তা।

সংসদ ভবন আসতে আসতে বৃষ্টি থেমে গেছে। কিন্তু কিছু একটা ঝামেলা আছে। ফাল্গুনের শুরুতে সাধারণত এইরকম বৃষ্টি হয় না। কবিরের মনে হল সংসদ ভবন জায়গাটাও অন্যান্য সময়ের থেকে একটু অন্যরকম লাগতেছে। সবসময় এই জায়গায় সে ময়লা আবর্জনা দেখে আসছে। আর আজকে কিনা সব পরিষ্কার দেখাচ্ছে! সংসদ ভবনের দক্ষিণের পাশের রাস্তায় সাড়ি সাড়ি সাইকাস গাছ। অগুলার পাশ দিয়েই হাঁটছিল। খেয়াল করে দেখল, রাস্তার আইল্যান্ডের মাঝে কৃষ্ণচূড়াগুলোও কেবল ফুটতে শুরু করেছে। কিছুদূর হেটে গিয়ে দেখল একদল লোক ব্যায়াম করতেছে। সামনে একটু নিচু জায়গা দেখে, লাফ দিয়ে পার হতে যাবে, কিন্তু কি মনে করে পিছনে তাকাল। দেখল আড়ং এর মোড় এর দিক থেকে বেণু আসছে।

মেয়েটাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। শাড়ি পড়ে এসেছে। একটা নাটকীয় ভঙ্গিতে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরবে কিনা চিন্তা করছিল। চিন্তা করতে করতে ততক্ষণে বেণু কাছাকাছি চলে এসেছে। কবিরকে দেখে বেণু একটা আলতো হাসি দিল। আর ভোরের আভায় সেই হাসির ঝিলিকে কবির ভাবল এই রকম একটা মানুষ সে কিভাবে খুজে পেল! কাছে আসতেই কবির ওকে আলগা করে তুলে নিল। বাহ, এত অনেক হালকা। বেণু চেঁচিয়ে উঠল – “ছাড়! শাড়ির ভাজ নষ্ট হয়ে যাবে, অফিস যাচ্ছি তো”। এত উচ্ছল একটা মেয়ের সাথে ওর জীবন পার হবে, সেটা মনে হয়না ও কখনও ভেবেছিল।

হাঁটতে হাঁটতে সাইকাসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল আর কি যেন একটা গানের সুর গুনগুন করছিল বেণু। খুবই পরিচিত গান, কিন্তু কবির ধরতে পারতেছেনা। কবির ভাবতেছিল এই মুহূর্তে সে সাইকাসগুলোর থেকেও সুখী মানুষ। গাছ থেকে ফলগুলো যখন মাটিতে পরছিল, কবির প্রত্যেকটা শব্দ টের পাচ্ছিল। হঠাত করে গাছে জমে থাকা বৃষ্টির পানি ওদের মাথার উপর পড়ল। পানির ফোটাগুলো বেণুর নাকের উপর ভিড় করে স্বচ্ছতার জানান দিচ্ছিল। কবিরের মনে হল, সবকিছু স্লো মোশনে চলছে। বেণুর সাথে হাঁটতে গেলে এটা ওর প্রায়ই মনে হয়, সময়টা যদি থমকে যেত। বছরের বছরের পর ধরে যদি ওরা এভাবে একসাথে হেঁটে যেতে পারত। এমন সময়ই ছোটবোন তারানা ধাক্কা দিয়ে ঘুম থেকে উঠাল – “এই ভাইয়া, এই ভরদুপুরে এত জোড়ে গান চালিয়ে ঘুমাচ্ছ কেন!” কবির চোখ কচলাতে কচলাতে কিছুক্ষণের জন্য হা করে তাকিয়ে থাকল। হেডফোনে তখনও ফুল ভলিউমে বাজতেছে –

আজ যখনই ডাকি
জানি তুমি দিবে সাড়া
এই জীবন ছিল
নদীর মতো গতিহারা দিশাহারা
ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে
আমি হয়ে গেছি তারা


জাহাজ ভাঙ্গা দ্বীপ

by Md Imran Hasan Hira

ফয়সাল প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে।

দ্বীপটাতে একটা স্বর্গীয় ভাব আছে। ছোট্ট এই জায়গাটার সৌন্দর্যের মায়ায় সবাই এমনভাবে আটকা পরে যায় যে একবার আসলে আর ফিরে যেতে ইচ্ছে করেনা। পুরো দ্বীপটাতে বাড়িঘর বলতে অবশ্য তেমন কিছু নাই, একটা পুরনো রাজপ্রাসাদ আছে।

রাজপ্রাসাদ থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে ফয়সাল বের হল। ওর পিছনে এক ঝাঁক সৈন্য ওকে তাড়া করছে। সৈন্যদের হাতে বল্লম, তরবারি আর সব ধারালো অস্ত্র। ওদের চোখেমুখে রং দিয়ে আকা। দেখতে এমনই হিংস্র যেন ফরসালকে ধরতে পারলে ওরা চিবিয়ে খাবে। আকাশ তখন মেঘে অন্ধকার হয়ে গেছে। ঝড়ো বাতাসে চারপাশের সুন্দর পরিবেশ তাণ্ডব মুর্তি ধারণ করছে।

ফয়সাল প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে। সদরগেট দিয়ে বের হয়ে ডানে যাবে নাকি বামে, সেটা বুঝছিল না। পরে ডান দিকেই ঘরে দৌড়াতে থাকল। দৌড়াতে দৌড়াতে ও দেখল সামনে একটা কারেন্টের খাম্বা আছে। খাম্বা থেকে রাস্তাটা আবার ডানে মোড় নিয়েছে। ডানে কি আছে, ও দেখতে পাচ্ছে না। ও শুধু দৌড়াচ্ছে। খাম্বার কাছাকাছি এসে দৌড়ের রেশ না থামাতে পারে ও আর একটু হলেই পড়ে যাচ্ছিল রাস্তা পার হয়ে। কোনমতে খাম্বা আঁকড়ে ধরে সামলে নিল। কিন্তু সাথে সাথে অবাক করা একটা ব্যাপার ঘটল। খাম্বা’র উপর কি যেন আঁকা।

তিনটা মাথার খুলি’র মত, সমান দূরত্বে। একটা ত্রিভুজের তিন কোনায়, তিনটা। অবাক করা ব্যাপার যেটা হল, এই খুলি গুলোর সাথে আঙ্গুল লাগালেই স্পার্ক হচ্ছে। আর ও খেয়াল করে দেখল, প্রতিটা স্পার্কের সাথে একটা একটা করে বজ্রপাতও হচ্ছে, এবং সেটা গিয়ে পরতেছে ওকে ধাওয়া করা সৈন্যগুলোর উপড়ে। ফয়সাল আর কিছু চিন্তা করতে পারলনা। চোখ বন্ধ করে, নিজের সমস্ত শক্তি নিয়ে তিনটা খুলিতে তর্জনী, মধ্যমা আর অনামিকা চেপে ধরল। গত কিছুক্ষণের দৌড়ানি’র হাঁপানি এখনও যায়নি। এত বজ্রপাতের মাঝেও, নিজের প্রতিটা হার্টবিট শুনতে পাচ্ছে সে। হঠাত করে কিছু একটা বাধ সাধল।

অকস্মাৎ দেয়াল পেরিয়ে কোত্থেকে উটকো সাইজের এক সৈন্য এসে ওর আঙ্গুলের উপর কুড়াল দিয়ে কোপাতে লাগল। প্রতিটা আঘাতে ফয়সাল ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠছিল। কিন্তু তারপরও সে আঙ্গুল গুলো কারেন্টের খাম্বায় খুলির উপর চেপে ধরল। আর হঠাত করে সে দেখল এই দিক বরাবর, একেবারে ওর মুখের সামনেই আর একটা খুলি আছে। ও বুঝতে পারছিল না কি করবে। কোনমতে নিজের ব্যাল্যান্স সামলে নিল। তারপর বাম হাত দিয়ে খুলিটাকে চেপে ধরে কিছুক্ষণ রাখতেই, বিশাল এক বজ্রপাত এসে কুঠারওয়ালা সেই সৈন্যের মাথার উপর পড়ল।

অবশেষে ফয়সাল এই সব সৈন্যদের হাত থেকে বাঁচল। খাম্বার যে পাশে ও ঝুলছিল, সেখান থেকে বের হয়ে গিয়ে খুঁজতে লাগল কিভাবে দ্বীপ থেকে পালাবে। এই দ্বীপে আর নাহ।

কিছুদূর হাঁটার পরে ও দেখল, পাশের একটা টিলাতে ঘাসের উপর একটা জ্যাকেট পড়ে আছে। দেখে মনে হল এটা ওরই জ্যাকেট। ওর কেন যেন Deja Vu রকমের একটা অনুভূতি হল। মনে হল, সকাল বেলা ও এখানেই ছিল। কারও একজন এর সাথে সুর্যোদয় দেখতে বের হয়েছিল। দুজন মিলে হাঁটতে হাঁটতে দ্বীপের এদিকটায় আসছিল। তারপর একটা জাদুঘরে ঢুকছিল। জাদুঘরে পুরানো রাজ-রাজাদের অনেক কিছুই সাজানো ছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেরকম কোন জাদুঘর এই দ্বীপে নেই। কিংবা এই দ্বীপে ওরা কিভাবে/কখন আসছে সেসব কিছুই মনে করতে পারল না।

জ্যাকেটটা নিয়ে হাতে পেঁচিয়ে নিল। তারপর সামনে হাঁটতে লাগল। দেখল কয়েকটা প্লাটফর্মে সারি সারি করে ছোট ছোট নৌকা বাধা। আরও কিছুদুর এগিয়ে গিয়ে দেখল একটা উষ্কখুষ্ক টাইপের লোক চেচাচ্ছে, “দ্বীপের জাহাজ ওইদিকে, দ্বীপের জাহাজ ওইদিকে”। আশেপাশে আর কোন লোক নাই, তারপরও এই লোক চেঁচাচ্ছে কেন, সেটা চিন্তা করতে করতে ফয়সাল জাহাজের দিকে হাঁটা দিল। জাহাজ কি খুঁজে পাবে ফয়সাল?


টূম্পা কাহিনী

by Md Imran Hasan Hira

— সাইফাই গল্পের গুষ্টি কিলাই —

৩০১৭  সালের একদিন বিকাল বেলা। টুম্পাদের স্কুল ছুটি হয় বিকাল তিনটার সময়। টুম্পাদের এই স্কুলটা আজব একটা স্কুল। অবশ্য পৃথিবীর বাইরে এরকম স্কুল এটাই প্রথম।

প্রতিদিন পৃথিবী থেকে কয়েকটা সোলার সিস্টেম পেরিয়ে অন্য একটা গ্রহে গিয়ে ক্লাস করা একটু ঝামেলাই বটে। কিন্তু টূম্পার অভ্যাস হয়ে গেছে। এই স্কুলটাতে অনেক মজা আছে। টুম্পার বাসা থেকে স্কুলটা খুব কাছে। ওর বাসার দুই ব্লক সামনেই স্পেস শাটলের স্টেশন আছে। একটা স্পেস শাটলে উঠে কয়েক মিনিটেই সাই করে চলে আসা যায়। কয়েক আলোকবর্ষ দুরের গ্রহে এরকম দ্রুতগতিতে চলার ব্যাপারটা, এখন থেকে হাজার বছর আগে পুরাপুরি অবিশ্বাস্য ছিল। কিন্তু বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষ যে কত এগিয়ে গেছে, সেটা এই স্পেস শাটলগুলো না দেখলে বুঝা যেত না।

পৃথিবী ছাড়াও আরও পনেরটা গ্রহ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা আসে এখানে ক্লাস করতে। অন্য যারা আসে, ওরাও বেশ মজার। মিটকিট গ্রহ থেকে দুইটা রোবট আসে ওদের সাথে পড়তে। পিটাপাস গ্রহ থেকে কয়েকজন আসে। এদের একজনের আবার তিনটা চোখ। এটা নিয়ে যদিও ওর অন্য বন্ধুরা হাসাহাসি করে, কিন্তু টূম্পা কখনও এগুলো নিয়ে হাসাহাসি করে না। কারন টূম্পা জানে যে পৃথিবী ছাড়াও অন্য গ্রহের যারা আছে, তাদের একেকজন একেক রকম হবে, এটাই স্বাভাবিক। এতে হাসির কিছু নেই। Read the rest of this entry »


Why does most people find Sun hot and Moon relaxing ?

by Md Imran Hasan Hira

Sun is definitely Hot. Yeah, it’s 40+ degree celsius in some places in summer. While that varies country to country, but most of the time Sun is the representation of Power ( spoiler: it’s a star ) . And on the other hand, Moon is the representation for tenderness, love, relaxation. Is it just because the Sun is a star and the Moon is a satellite ?

I think Star vs Satellite thing is kinda true. But there is something more. It just not the fact. There are history associated.

Back from human civilization, people work in days and take off at night. Well, at least that’s what “civilized people” now a days do. Days are good for working because there are lights :p Obvious fact. They also play games, work hard in the field, move houses…all these happen during daytime. So they started associating the energetic activities with the brightest thing, Sun.

And when people come back home after work, see the Moon on the sky, it’s kind of already relaxing from work and they enjoy the beauty with other charming activities i.e. moonlit dinner, rooftop gossiping, gossiping over the playground with the Moon over the sky, taking night bus journeys looking through the window to the Moon over cornfield…etc. All these activities are kind of soothing and makes a association.


Give me back the original tune

by Md Imran Hasan Hira

Have you ever had this feeling, where you listened a music and then all of a sudden you can’t find the original tone in that music?

So, I was listening a music from youtube for couple of days (yeah I fall looped). But one night I had a bad sleep and in the morning when the music is playing I just can’t recognize the original tone. It’s changed. I checked the url, it looks same, checked from my browsing history, it’s the same music. But somehow I just don’t recognize it as I heard the night ago.

I tried to listen it couple of times, but every time I hear it, I find it quite different. The beats are slow, the tone jumps are different. I search in youtube with same music and they all sound different. The main difference is that the new tune (possibly it’s just my perception) has extra layer of push on every ending beat for a line. And finding it not similar to the one I heard before, gives me a feeling that someone is mocking the music.


ভেরেণ্ডা ভাজি

by Md Imran Hasan Hira

: আসসালামু আলাইকুম
:
ওয়ালাইকুম আস সালাম, কেমন আছেন ?
:
আলহামদুলিল্লাহ ভাল। তোমার কি খবর ?
:
খবর ভালই। সারাদিন ধরে ভেরেণ্ডা ভাজলাম। এখন সেটা দিয়ে কি করব ভাবতেছি।
:
টেস্ট কেমন হইছে ? ভাল হইলে বাসায় নিয়ে এসো
:
হাহা
:
কি, আসতেছ?
:
নাহ, ভেরেণ্ডা এতই মজা হইছে যে নিজেই সব খেয়ে ফেলছি। আমি আবার খুব ভাল রান্না পারি, জানেনই তো।
:
ইয়েস, এটাই বলবা ভাবছিলাম।
:
মানে, এতই ভাল রান্না পারি যে, কাউকে দাওয়াত দেবার দুঃসাহস হয়নাই এখনও :p
:
হুম জানলাম, কাল কি রান্না করবা ?
:
কালকে তো অফিস খোলা, দুপুরে আমার জন্য স্পেশাল রান্না আছে। CEO কে বলে রেখেছিলাম, বোয়াল মাছের ঝোল, আর করল্লা ভাজি। সাথে ডাল, আর ডিমভর্তা।
: Guest
হিসাবে যাওয়া যাবে? করল্লা খুব প্রিয় খাবার কিনা।
:
অবশ্যই যাওয়া যাবে। চলে আসেন কালকে।
: আইটেম গুলা ঠিক থাকবে তো ?
: বাবুর্চি কে বলে রাখব, যাতে করে একজনের জন্য বেশী বাজার করে রাখে।
: CEO কে বললে ভাল হতো মনে হয়
: হুম। এক কাজ করলে কেমন হয়, ভাইয়া কে CEO পোস্টে দাড় করিয়ে দেই :p ভাইয়ার জন্য তো এসব দুই আঙ্গুলের ব্যাপার। এক আঙ্গুল দিয়ে অফিস চালাবে, আর আরেক আঙ্গুল দিয়ে করল্লা ভাজি করতে ইশারা করবে 😀 😀 ব্যাস, ভাইয়াও খুশী, আমরাও মনে করেন পেটপুরে কিছু খেতে পারব 🙂
: ভেবে দেখি, তবে প্রস্তাবটি খারাপ না
: Ok, Deal!
: হুম তাইলে একদিন আসো চানাচুর মাখা খাইতে খাইতে আলাপ করা যাবে
: আচ্ছা, চলে আসব 🙂


Theme by Ali Han | Copyright 2025 Md Imran Hasan Hira | Powered by WordPress