"We human being, always find a solution, maybe not today, but if you really want to solve a problem, there’s always a way" – Ma Yun @ Stanford, 2013

আজ আফসানা’র ফ্লাইট

by Md Imran Hasan Hira

গুরাহ রাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। খুব একটা বেশী বড় না। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স এর বিমান সাই সাই করে উড়িয়ে নিয়ে চলে আসছে। অনেকটা হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর বাসের মত। জাভা সাগরের উপর দিয়ে আসার সময় অনেক গুড়ি গুড়ি নৌকা চোখে পরছে। বিমান নামার আগে পাইলট এর কথামত কোমড়ের দড়ি(!) শক্ত করে বেধে নিয়েছিল আফসানা। ল্যান্ড করার পর সেটা আলগা করে নিল। নামার আগে চেক করে নিল পাসপোর্ট সাথে আছে কিনা। এখন প্রথমেই যে কাজ করতে হবে, ডলার ভাঙ্গিয়ে রুপিয়াহ বানাতে হবে। এয়ারপোর্ট এর ভিতরে একটা মানি এক্সচেঞ্জ আছে। কিন্তু ওইটাতে যে পরিমান ভিড়, তাতে সারাদিন লাগবে মনে হচ্ছে। আস্তে আস্তে এক্সিট দিয়ে বের হয়ে বাইরে আর একটা এক্সচেঞ্জ খুঁজে বের করল। এখানকার কারেন্সির যা অবস্থা, মানি এক্সচেঞ্জ করে তো সে প্রায় কোটি টাকার মালিক হয়ে গেল।  

দেনপাসা শহরটা বেশ বড়ই। কি অদ্ভুত একটা নাম, শহরের নাম কেউ এমন দেয় ! দেনপাসা হচ্ছে বালির রাজধানী। ইন্দোনেশিয়ার ট্যুরিস্টিক এলাকাগুলোর মধ্যে বালি দ্বীপ একেবার টপের দিকে। জিওগ্রাফিকাল লোকেশন চিন্তা করলে এই দ্বীপের আবহাওয়া মোটামুটি মনসুন ক্লাইমেট এর মধ্যে পরে। সতের হাজার দীপের একটা দেশ, ম্যাপের উপরে ডানে বামে যেখানে তাকাই, সেখানেই খালি দ্বীপ। মনে হয় পানির মধ্যে থেকে এক গাদা ব্যাং মাথা উঁচু করে তাকিয়ে আছে। সম্ভবত বেশী বেশী ভূমিকম্প হবার কারনেই এমন হয়ে গেছে, কে জানে! 

আফসানা’র থাকার জায়গা হচ্ছে পুলম্যান রিসোর্ট। ন্যানোটেকনোলজির একটা কনফারেন্সে এসেছে ও। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে এইখানে ওদের কাজ একসেপ্ট হয়ে যাবে, ভাবতেই পারেনি। কনফারেন্স অথরিটি থেকে ও যখন কনফার্মেশন ইমেইল পেয়েছিল, কিছুক্ষণ হা করে ছিল। থিসিস সুপাভাইজরও বলল প্রেজেন্ট করে আস। এই কনফারেন্সটা প্রতিবার অনলাইনে করে। এবারই প্রথম ফিজিক্যাল ভেন্যুতে আরেঞ্জ করতেছে। সমুদ্র সৈকতের একেবারে পাশে। এয়ারপোর্ট থেকে একটা ট্যাক্সি নিয়ে রিসোর্টে চলে এসেছে সে।

তাড়াহুড়া করে কাজকর্ম গুছাতে গিয়ে ট্রিপের ব্যাপারে তেমন কোন প্লানই করতে পারেনি আফসানা। কনফারেন্স তিনদিনের। যেদিন শেষ, সেদিনই রিটার্ন করলে টিকেটেরে দাম বেশী দেখে দুইদিন পরের টিকেট নিয়েছে ও। ট্রাভেল এজেন্সি থেকে বলল দুইদিন এক্সট্রা থাকা লাগলেও, সব মিলিয়ে এটা ভাল ডিল। খারাপ হয়নাই, লাস্টের দিন এমনিতেও ওর প্রেজেন্টেশন নাই, সব মিলায়ে এক্সট্রা তিন দিন ফ্রি পাওয়া যাবে। হোটেলে পৌঁছে, ফ্রেশ হয়ে পেপারের কাজকর্মে বসে গেল। 

বিকালে হতে হতে খেয়াল করল পোস্টার প্রিন্ট করতে হবে। যতটুকু এডিট করেছে, সেটাই এখন প্রিন্ট না করালে আবার দোকান খোলা পাওয়া যাবে কিনা সেটাও একটা কথা। আশেপাশে প্রিন্ট করার জায়গা খুঁজতে গুগল ম্যাপে সার্চ দিল, কিছু দোকানের নাম দেখাচ্ছে। কোয়ালিটি কেমন হবে কে জানে। মোবাইলের ম্যাপে ও কিছুক্ষণ আশেপাসের জায়গা গুলো ব্রাউজ করে নিল, তাইলে নেট না থাকলেও ক্যাশ থেকে ম্যাপটা কাজ করবে। পেনড্রাইভে পোস্টারের ফাইলগুলা সেভ করে আফসানা বের হয়ে গেল হোটেল থেকে। 

প্রথম যে দোকানটা দেখেছিল ম্যাপে, সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর আর একটা দোকানে দেখল প্রিন্ট করা যায়। ওটাতে ঢুকল আফসানা। ঢুকতে ঢুকতে পাশ থেকে শুনল একজন বাংলায় ফোনে কথা বলতেছে, একপেশে কথা যদিও।  
– হ্যালো মামা, শুনতে পাচ্ছেন? মামা, আপনাদের বাসা নাম্বার যেন কত?
– আচ্ছা, আমি আর একবার বলি ঠিকানা, ঠিক আছে কিনা দেখেন তো।
– না মামা কিছু না, এমনেই জিজ্ঞেস করতেছি।
– জি আমি ভাল আছি, ইজতেহাদ আর ইরতিদা কেমন আছে?
– জ্বি মামা, এখন রাখি। দোয়া করবেন।

ফোনে কথা বলছিল যে, কিচ্ছুক্ষণ পর সে কাউণ্টারে এসে দুইটা পোষ্টকার্ড নিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করল যে এই দুটো বাংলাদেশে পাঠাতে কত খরচ পরবে। আফসানা একটু ওয়েট করল তার পোষ্টকার্ড পাঠানো শেষ পর্যন্ত, তারপর আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল – 
– আরেহ ভাই, আপনি বাংলাদেশী নাকি ?
– হ্যা, আপনি?
– বাংলা শুনে তো বুঝতেই পারছেন।
– হা হা, সেটা ঠিক।  
– ঘুরতে এসেছেন?
– হ্যা, আপনি?
– আমি একটা কনফারেন্সে আসছি। পোস্টার প্রিন্ট করাব, এইজন্য ভাল একটা দোকান খুজতেছি। 
– কিসের পোস্টার?
– কনফারেন্সের কাজকর্ম আর কি। 
– উড়ি বাবা! গবেষনা কাজকর্ম, সে তো অনেক কঠিন কাজ।
– কি বলেন, আমার কাছে তো এখন প্রিন্ট করানোটা আরও কঠিন কাজ মনে হচ্ছে। 
– হুম, পোস্টারের জন্য তো বড় প্রিন্টার লাগবে।
– হ্যা।
– দাঁড়ান দেখি। 
কিছুক্ষন গুগলে সার্চ দিয়ে দুইটা দোকানের সাজেশন দিল। তারপর আফসানাকে মোবাইলে দেখিয়ে দিল কিভাবে যেতে হবে।

কনফারেন্সের মেইন দুইদিন বেশ দৌড়াদৌড়ি গেছে। প্রতিদিনই হোটেলের রুমে আসতে আসতে অনেক দেরী। আর টায়ার্ড হয়ে কোনমতে ফ্রেশ হয়ে ঘুম। শেষদিন সবকিছু গুছিয়ে বিকালের আগে যা একটু সময় পাওয়া গেছে। আফসানা ভাবল বীচ থেকে ঘুরে আসবে। 

রীসোর্ট থেকে বেরিয়েই সমুদ্র সৈকত। হাটতে হাটতে লেগিয়ান বীচের ধারে এসে পড়ছে। আকাশটা বেশ পরিষ্কার থাকায় সমুদ্রের পানি নীল হয়ে গেছে। 
– আরেহ আপনি এখানে ?
– হ্যা, আমি কাছেই থাকি। 
– থাকেন মানে?
– থাকি মানে, এখানে একটা airbnb নিয়ে থাকি। 
– আপনি না ঘুরতে এসেছেন? 
– হ্যা, ঘুরতে আসছি। ঘুরতে আসলে কি থাকা যাবেনা?
– না না, তা না। কতদিন ধরে আছেন এখানে? 
– সপ্তাহখানেক হল এসেছি। মাসখানেক থাকব।
– এতদিন ধরে থাকবেন?
– আমি আসলে এখান থেকে কাজ করি। আমার জবটা রিমোট জব। এই জন্য একটু সুবিধা। 
– আচ্ছা। আপনি তো বেশ আরামে আছেন। জব করার উছিলায় ঘুরাঘুরি করতেছেন। 
– সব সময় তো ঘুরাঘুরি হয়না। আজকে কাজ করতে করতে একটা জিনিস মিলতেছিলনা, এই জন্য মাথা খালি করতে হাঁটতে বের হইছি। আপনার প্লান কি? 
– তেমন স্পেসিফিক কোন প্লান নাই। এখানে কিছুক্ষণ থাকব। তারপর উলুয়াতু মন্দিরের দিকে যাব। আপনি গেছেন নাকি?
– হ্যা, গিয়েছিলাম গত সপ্তাহে। জায়গাটা সুন্দর অনেক। 
– আমিও শুনেছি এটা নিয়ে, দেখি কেমন লাগে। 
– আপনার কনফারেন্স কেমন হল? 
– ভালই হয়েছে। 
– কিছু মনে করবেন না, আপনি কোন ভার্সিটিতে পড়াশুনা করতেছেন? 
– বুয়েট থেকে। 
– হা হা 
– হাসতেছেন কেন?
– আপনি কোন ব্যাচ?
– আমরা কেবল পাস করে বের হয়েছি। 
– আচ্ছা, আমি ‘০৭ ব্যচ। 
– আরেহ তাই নাকি ভাইয়া। 
– (মনে মনে) ধুর এভাবে ভাইয়া বলে ফেলল ! (অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রেখে) বাহ, এখন কি মাস্টার্স করতেছ? তুমি করে বললাম। কিছু মনে করনাই তো! 
– আরেহ না না, সমস্যা নাই, আমরা তো ছোটই। হ্যা, মাস্টার্সের লাস্ট সেমিস্টার চলতেছে। কিভাবে কিভাবে যেন পেপারটা আক্সেপ্টেড হয়ে গেল। তাই এখানে আসছি। 
– কিসের উপর পেপার ছিল?
– এইত, ন্যানোনিডল নিয়ে। আমরা আন্ডারগ্রাড এ থাকতে পার্টটাইম কাজ করেছিলাম একটা কোম্পানিতে। ওখানে কাজ করতে গিয়ে একটা টীমের সাথে পরিচয় হয়। ঢাকা ভার্সিটির একটা টিম আর বুয়েট মিলে এই রিসার্চটা করতেছে। টপিকটাতে বেশ মজা পেয়ে যাই। তারপর সেটাই মাস্টার্সের প্রোজেক্টে এ সিলেক্ট করেছিলাম।
– ভাই রে ভাই, কিভাবে পার!
– কই আর পারলাম, এত পড়ালেখা করে শেষ পর্যন্ত সুই বানাচ্ছি।
– সুইকে সুই বলে ছোট করে দেখার কিছু নাই। 
– আপনি মাষ্টার্স করছেন?
– নাহ, আমি স্বল্পশিক্ষিত মানুষ, বেশী লেখাপড়ার সুযোগ হয়নাই :p

হাটতে হাটতে ওরা লাবনী পয়েন্ট থেকে একেবারে কলাতলী বীচে চলে এসেছে। ধুর, কি বলতেছি, লেগিয়ান বীচ থেকে কুতা বীচে চলে এসেছে। 
– এই জায়গাটা দেখতে অনেকটা কলাতলী বীচের মত। 
– সেটা আবার কোন বীচ? 
– কক্সবাজারের একটা বীচ। আপনি কক্সবাজার গিয়েছেন? 
– গিয়েছিলাম মনে হয় একবার। সে তো অনেক আগে। বুয়েট থেকে বের হবার পরপর মনে হয়। ও হ্যা মনে পড়েছে, কলাতলী বীচ। সবচেয়ে ময়লা বীচটা?
– তা অবশ্য ঠিক বলছেন। মানুষজন বেশী বেশী গিয়ে ময়লা করে ফেলেছে।
– এখানে সমুদ্রের ডেপথ একটু বেশী থাকার জন্য সমুদ্র সৈকত খুব একটা প্রশস্ত না। কলাতলীর ওখানে মানুষজনকে অনেক দুর পর্যন্ত যেতে দেখছি মনে হয়।
– হ্যা। এখানের বীচও তো কম ময়লা না। এর থেকে সেন্ট মারটিন এর বীচ অনেক সুন্দর। 
– সেন্ট মারটিন গিয়েছিলাম আমাদের র‍্যাগ ট্যুরে।
– তাই নাকি?
– হ্যা, সেই ট্যুর। ওই সময়টা পুর্নিমা ছিল। আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে বীচেই এক রাত পার করে দিছিলাম। আমার অবশ্য খুব বেশী কিছু মনে নাই। ব্যাচের কয়েকজন সবকিছু আরেঞ্জ করছিল দেখে আমরা বাকিরা দিব্যি আরামে ট্যুর দিছি। তখন আসলে বুঝতাম না যে ঘুরাঘুরি করতে কত মজা। 
– ঘুরাঘুরি করতে কার না ভাল লাগে! 
– ভাল লাগেনা এমন না। মানে ভার্সিটীতে থাকতে ঘুরার অনেক সময় ছিল, পোলাপান ছিল, ঘুরিনাই।
– ঘুরেননাই কেন?
– হলে বসে ঝিমাইছি। যা মিস হয়ে গেছে, গেছে। এখন সেগুলো পোষাতে হবে :p তোমাদের র‍্যাগ ট্যুর কই ছিল? 
– সেন্ট মারটিন এই। আমি অবশ্য যেতে পারিনি। 
– কেন?
– এমনেই
– এমনেই মানে! কেউ কি ইচ্ছা করে র‍্যাগ ট্যুর মিস করে নাকি!
– না, তা না।
– আরেহ ধুর, কি যে বলেন!
– র‍্যাগ ট্যুরে না গিয়ে করছ কি তাহলে?
– বসে বসে গান গাইছি। 
– কি গান?
– আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে
– সেন্ট মার্টিনে তো বন নাই। 
– কে বলেছে নাই, ছেড়া দ্বীপের ওইখানে একটু ঝোপঝাড় আছে, ওটারেই বন হিসেবে ধরেন। 
– হা হা, হইল না, সুন্দরবন গেলে না হয় বলতে পারতা।

আফসানা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল তিনটার মত বাজে। 
– আচ্ছা, আমি এখন উলুয়াতু মন্দিরের দিকে যাব। আপনি যাবেন নাকি?
– যাওয়া যায়, আমার এমনিতেও এখন কাজে মন বসবে না। তার থেকে ওখানে বসে সুর্যাস্ত দেখতে মন্দ হবে না।  

কুতা বীচ থেকে উলুয়াতু মন্দির ট্যাক্সিতে ঘন্টাখানেকের রাস্তা। একা একা গেলে ভালই খরচ পরত। দুইজন হওয়াতে মোটামুটি কমই। চারটার একটু পরে ওরা পৌঁছুল। আজকে সন্ধ্যা হবে সাড়ে ছয়টার দিকে। হাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টার মত সময় আছে।

ঢোকার মুখে টিকেট কাউন্টার। ট্যাক্সি ড্রাইভার টিকেট কেটে দিবে বলে টাকা নিয়ে গেল, একটু পরে আবার ফেরত আসল। কেচাক নাচ নামে একটা নাচ হবে। সেটার টিকেট আলাদা করে বিক্রি করতেছে। দেড় লাখ রুপিয়া। ওরা কিনবে কিনা জিজ্ঞেস করল।
– লাখ টাকার নাচ, দেখবা নাকি? 
– দেখা যায়। আপনি দেখবেন? 
– চল।

দুটো টিকেট কেটে ওরা মন্দিরের মধ্যে ঢুকল। মন্দির খোলা থাকে সাতটা পর্যন্ত। মন্দিরের ভিতরে হাটার রাস্তাটা পাহারের কিনার ঘেঁষে বেয়ে বেয়ে গেছে। একটা জায়গায় মোটামুটি ফাকা দেখে দাড়াল ওরা।  আকাশের রংটা হলুদ আর লালের একটা মিক্স হয়ে গেছে। ওরা যেখানে দাড়িয়েছে, সেটা একটা চুড়া। আসলে পুরো মন্দির এলাকাটাই পাহাড়ের চুড়ায়। ক্লিফ ঘেঁষে রাস্তা বানানো, অনেক খাড়া ক্লিফ। লাফ দিলে ভাল একটা দড়ি ছাড়া বাঞ্জি জাম্পিং হয়ে যাবে। ক্লিফের আশেপাশে কিছুদুর পরপর কাগজী ফুলের ঝোপ। বিকালের হলদে আলোতে আফসানাকে দেখতে অন্যরকম লাগছে। আর তার সাথে পিছন থেকে গোলাপি ফুলগুলো, সব মিলিয়ে আলাদা একটা মায়া কাজ করতেছে। কাগজী ফুল দিয়ে দুটো ঝুমকা বানিয়ে দিলে মানাবে বেশ। মনের অজান্তেই গুনগুন করে একটা সুর চলে আসল –

অই দুর পাহাড়ে, লোকালয় ছেড়ে দুরে
মন কেড়েছিল এক দুরন্ত মেয়ে সেই কবে
হিমছড়ীর বাঁকে

– গান গাচ্ছেন নাকি?
– হ্যা, অনেক বড় শিল্পী তো, প্রতিভা চেপে রাখা যাচ্ছেনা।
– দেখছেন, এই জায়গাটা দেখতে হিমছড়ির মত না?
– আরেহ তাইতো, ঠিক বলছ।
– চলেন, কেচাক এর টাইম হয়ে গেছে। আগে আগে না গেলে ভাল সীট পাওয়া যাবেনা। 

কেচাক নাচ দেখতে এইখানে অনেক লোক আসে। জিনিসটা রামায়ণের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে বানানো। হনুমানের নেতৃত্বে একদল বানর থাকে। বানরের দল রাবনের সাথে যুদ্ধ করে রামকে জিতিয়ে দেয়। প্রায় শখানেকের মত পার্ফরমার। স্টেজ এ ওরা যেখানে বসেছে, সেখান থেকে দুরে তাকালে সমুদ্র। ক্লিফ এর মাথায় একটা “Door of heaven” এর স্ট্যাচু। Door of heaven হল দুইটা বড় কপাটের মত, মাঝখান দিয়ে খোলা। ইন্দোনেশিয়াতে মোটামুটি সব জায়গায়ই এইটার ছোট/বড় ভার্শন দেখা যায়। তো ওইটা বরাবর তাকালে সমুদ্রের উপর সুর্যাস্ত দেখা যাচ্ছে।

নাচের মাঝখানে কয়েকটা মশালে আগুন ধরায়ে দিল। সুর্য ডোবার পরে যখন একটু অন্ধকার হয়ে গেল তখন পুরো ব্যাপারটাতে একটা জংলী ভাব চলে আসল। আদিম যুগে মানুষজন আগুন জালায়ে চারপাশে যেমন নাচত, ওইরকম। সব মিলিয়ে সেট আপটা সুন্দর, ভাল লাগার মত। পুরো সময়টা বেশ ভালই কাটল।

মন্দির থেকে বের হয়ে, ওরা চিন্তা করছিল কোথায় খাবে। একবার চিন্তা করল উলুয়াতুর আশেপাশে কোথাও বসে খাবে। পরে মনে হল একবারে রিসোর্টের কাছে গিয়েই কোন একটা জায়গায় বসবে। একটা ট্যাক্সি করে রওয়ানা দিল কুতা বীচের দিকে। মাঝপথের রাস্তা ঢাকা চিটাগং হাইওয়ের মত, একটু চাপা আর কি। অন্ধকার হয়ে গেছে যদিও, তারপরও দুই পাশে দোকানপাটের লাইটের আলো আছে। কুতা বীচের কাছে আসতে আসতে রাস্তা ফকফকা, দেখে মনেই হচ্ছেনা রাত। অবশ্য এতক্ষণে ওরাও টের পেল পেট খিদেয় চো চো করছে। 

–x–

সুপ্রিয় দর্শকমন্ডলী, এতক্ষণ দেখছিলেন এ সপ্তাহের নাটক “আজ আফসানার ফ্লাইট”। আজকে এতটুকুই রইল। এখন শুরু হবে রাত দশটার সংবাদ 🙂


BUET Club Gamearena first mockup

by Md Imran Hasan Hira

We, few ex-university mates had a long cherish that we will have our own gamearena where students can submit their bots to play against certain games. This is the first mockup of the application. Needed to clear thoughts on my head. Will work on towards implementation.


How do you make “Formal definition of things”

by Md Imran Hasan Hira

This note is a followup of previous note (Why formal definition of “things” is important).

I would like to categorise alignment situation into following buckets –

  1. Meetings/discussions
  2. Tasks in jira/trello/gitlab
  3. Application/Services/systems/pipelines
  4. etc.

Meetings/discussions

It’s quite easy. We need a board/paper to draw the topics being discussed. We draw some boxes to represent entities. We draw the options being argued upon. A simple table might look like below. The person co-ordinating the meeting/discussion can volunteer to do this –

| Options  | Pros | Cons | Winner |   |
|----------|------|------|--------|---|
| Option 1 | ...  | ..   |        |   |
| Option 2 | ..   | ...  |        |   |
|   ...    |      |      |        |   |

Also, whenever someone asks questions – “What do you mean by this?” , we might need to be patient enough to explain the intermediate parts. Personally I am more biased to visualised representation in a discussion.

Tasks in jira/trello/gitlab

It’s important to mention details in the task ticket. For example, when there is a multi step task, it helps a lot if all the steps are written upfront. This gives an early idea about which section of the system is the expected work for corresponding ticket. Any kind of context is helpful.

Instead of Just error, include where it happened, who faced it, basically a correct way to reproduce the error. If it’s not reproducible, at least mention where it happened, how it happened.

It takes time to write these details, but if we don’t write it, we might have to spend similar amount of time explaining the same thing over chat/face2face to the person working on it. Better to have it in the ticket.

Application/Services/systems/pipelines

Explaining a system out of nowhere isn’t easy. If the system is large/complex, that’s even harder. The idea is to take scientific approach – break it into pieces, flows, something like lego.

Here is one way to describe a system –
1. A bunch of blocks representing individual scripts/crons/modules/systems/storages…etc.
2. A set of entities representing data structures, the data that is being passed around
3. A set of lines, drawing connections among #1 and #2

There are many more ways to describe a system. We can write pages of documentation with system design diagrams. Coming up with workflows. Any such kind of representation helps people to discuss over a system. Those formal definition makes sure that both people are talking about the same piece. And that facilitates a healthy debate.


What is a “Formal definition of thing” and why it is important

by Md Imran Hasan Hira

This note is about alignment in term of concepts while discussing any topic.

Working in a multi-cultural company has it’s own benefit and tricky things. People come from different styles, different behaviours. One thing common among us is, we want to solve our customer’s problem. The most important part in a discussion is to be aligned on the topic that is being discussed. Being able to understand the terminologies that is being used in the discussion, really helps everyone.

It can happen that people arguing about the same thing for some time. Even if they don’t argue, but keep talking same about the same thing, that is more worse than just wasting the time. It creates miscommunication/confusion and people have to revisit the same issue after a few days or week. “Formal definition” is here to rescue.

What the heck is this “formal definition” ?

Any form of representation that can be seen/read by more than one person at the same time, can be considered as a formal definition.It can be in written form ( i.e. documentation, wiki, email etc.) or visualised form ( i.e. diagrams, flowchart… etc.). These persistent things helps people to look at together and thus tie on what each one is talking about.

  • What is the benefit of “formal definition”: It’s easy to follow up with defined terminologies. It’s kind of a quantisation. With formal definition, people can argue about the specific system, avoiding personal conflicts. Once things are quantised, we can compare among solutions, we can discard old/suboptimal stuff and explore better stuff.
  • Why waste time in explaining if we can just fix it in minutes: Well, we are developers/engineers. We can fix things quickly. But for other people or for a developer who doesn’t have the context, will spend more time in understanding what we just did in two minutes. Some situations it might take more time than making a formal definition.
  • Traps of not doing formal definition : There is a common scenario when people say “we are just building things”, “the thing is changing too much” or “it’s too early to write formal documentation”. All these phrases are valid, and we all know that premature documentation is costly to maintain. But we need to make sure we have at least high+mid level definitions from where people can start further documentation.
  • When is “formal definition” not required : Formal definition might not be required when people work alone and don’t have to explain things to others. In booking.com we don’t have much of these scenarios.

Dude, isn’t it what we call ‘documentation’ ?

It is close to documentation. It’s a marketing technique to sell similar product in new packets :p The reason why I avoided “documentation” because I think there is a different perspective. Just “documentation” isn’t helpful. Making sure audiences are aware of the documentation is also important. We need to tie terminologies with context. The part I want to emphasise is whenever we have discussions with another person, we might be thinking that the other person already knows this. But in reality it may not be. With ‘formal definition’ keeping in mind, explaining the terminologies upfront, we can improve the outcome. Or at least that’s how we keep us aligned 🙂


চিতাবাঘের খামচি

by Md Imran Hasan Hira

আসার আগে, পর্যন্টন কেন্দ্রে একবার ঢু মেরেছিলাম। ওখান থেকে বলেছে, এই জঙ্গল আর এর আশেপাশের এলাকাগুলো অভয়ারণ্য হিসেবে মার্ক করা। তাই যেকোন কিছুই থাকতে পারে। আমরা অবশ্য ওভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। দশ-বার জন মানুষ আছি, প্রত্যেকের সাথেই ধারাল কিছু না কিছু আছে।

এই জঙ্গল নিয়ে রিসেন্ট যত ট্রাভেল ব্লগ আছে, সবগুলাতেই চোখ বুলিয়ে এসেছি। রিসেন্ট টাইমে কেউই তেমন হিংস্র কিছুর দেখা পায়নাই। বনবিড়াল আর হাতিই মোটামুটি সবার চোখে পরে। সর্বশেষ বছর আটেক আগে একজন নাকি একটা বাঘ দেখেছিল। সে কবেকার কথা, সেই বাঘ এতদিনে শিউর মরে ভুত হয়ে গেছে।

পাহাড়ি ট্রেইল ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমরা একেবারে মাথায় চলে আসছি। গাছ গাছালির ভিতর দিয়ে হাঁটতে অবশ্য খারাপ লাগেনাই। তবে শেষের দিকে খাড়া কিছু উঁচু জায়গায় সবার ভালই কাহিল অবস্থা গেছে। এতক্ষণ ধরে হাঁটার পরে কষ্টগুলা, এই জায়গায় এসে সবাই ভুলে গেছে। উপর থেকে দুরে কয়েকটা পাহাড়ের চুড়া দেখা যাচ্ছে। আর মাঝের জায়গাটা ছেড়া ছেড়া মেঘের অংশ দিয়ে ভরা। মনে হয় কেউ হাতে ধরে একটা ছবির উপরে মেঘগুলো বসিয়ে দিয়েছে।

আমরা যে জায়গাটায় আসছি এইখানে বেশ কয়েকটা বড়বড় পাথর আছে। ঠিক করলাম, আজকে রাত এইখান এই ক্যাম্পিং হবে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম, জায়গাটা একটু স্যাঁতসেঁতে। কিন্তু পাথরগুলার সাইড করে বেশ খানিকটা খোলা জায়গা আছে। আমরা কয়েকজন মিলে সেখানটা পরিষ্কার করে তাঁবু বসাতে লেগে গেলাম। তাঁবু সেট করা কঠিন কিছু না। তাঁবুর কাপড় রোল করা থাকে নরমালই। ভাল করে রোল করা থাকলে, সেটা খুলে তাঁবু সেট করতে দু মিনিটও লাগে না।

এর মধ্যে দুইজন লেগে গেল বার-বি-কিউ করার জন্য। মাংসের প্যাকেট কয়েকজন এর কাঁধে অল্প অল্প করে আগে থেকে ভাগ করে দেওয়া আছে, যাতে একজনের উপরে বেশী ভার না পরে। প্যাকেট থেকে ওগুলো বের করে একটা বাটিতে এক করা হল। ওদিকে কিছু ডালপালা দিয়ে আগুণ জ্বালানোর মত করে জড়ো করা হল। যদিও একটু ভিজা ভিজা, তারপরও ব্লোয়ার আর ফায়ার-এনহ্যাঞ্চার থাকাতে আগুণ ধরাতে সময় লাগল না।

বারবিকিউ যতক্ষণে হয়ে এসেছে, ততক্ষণে সবার পেটের অবস্থা চো চো। সারাদিন হাটাহাটির পর ক্ষিদে লাগাটাই স্বাভাবিক। আগুণের উপর থেকে যখন মাংসগুলা এক এক করে নামানো হচ্ছিল, নামাতে যতটুকু সময়, পেটের ভিতরে চালান করে দিতে মনে হয় কোন সময়ই লাগল না :p আর সাথে ছিল পাউরুটী। এর মধ্যে একজন আবার খুশিতে গান শুরু করল। এই রকম আকাশের তারা দেখতে দেখতে আর বারবিকিউ খেতে খেতে গান গাওয়ার বেপারটা অনেকদিন ধরে মিস করতেছিলাম। এবারের ট্রিপে সেই আশাটা পুর্ন হয়ে গেল 🙂

আড্ডা চলল আরও ঘণ্টা খানেক। এর ভিতরে ঘুম পেয়েছে অনেকেরই। ক্যাম্পিং এ বিছানা সেট করে সবাই ঘুমুতে চলে গেছে, আমি কি কারনে যেন একটা পাথরের উপর বসে ঘাস চিবাচ্ছিলাম। হঠাত করে দেখলাম একটা চিতাবাঘ একটা তাঁবুর পাশে ঘুরঘুর করতেছে। ড্যাম ইট! আমি তারায়ে দেওয়াড় জন্য জোড়ে হুস করে শব্দ করলাম। এবং সাথে সাথেই বুঝতে পারলাম, কত বড় ভুল করে ফেলছি।

বাঘটা আসলে চলেই যাচ্ছিল, আমার শব্দ শুনে পিছনে ফিরল। আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে, মনে হচ্ছে কত ভালবাসা। ভালবাসার গুষ্টি কিলাই, আমি পাশে একটা গাছ ছিল, সেটার একটা ডাল বেয়ে উপড়ে উঠার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঝামেলা হইতেছে, ডাল ধরে পা উপড়ে উঠাতে পারছিলাম না, কেমন যেন শক্তি নাই। সারাদিনে ট্র্যাকিং কম হয়নাই। পা আর একটা ডালের উপর উঠাতে পারলেই আপাতত নিচ থেকে বাঘটা আর ছুতে পারবে না।

অনেক কষ্টমস্ট করে গাছে উঠলাম, কিন্তু কিসের কি, চিতাবাঘটাও ওইদিক থেকে আর একটা গাছের একেবারে মাথায় উঠে গেছে। আমার আর বাঘটার মাঝে আরও একটা গাছ আছে। দেখলাম চিতাবাঘটা চেষ্টা করতেছে লাফ দেবার। দূরত্ব যতটুকু, তাতে ভালমতো লাফ দিলে আমার ঘাড়ে এসে পড়ার ভাল সম্ভাবনা আছে।

কি করব বুঝতে পারছিলাম না। চিৎকার করে বাকি সবাইকে ঘুম থেকে তুলাটা ঠিক হবে কিনা, নাকি ওদেরকে দেখে ওদের উপরও চড়াও হতে পারে। বাঘটা এতক্ষণে ভাল একটা পজিশনে দাঁড়িয়ে গেছে। এরপর এদিক সেদিক নড়াচড়া করে সে লাফ দিয়েই দিল। আমি দেখতে পেলাম, বাঘটার মুখ বড় হা করে এগিয়ে আসছে, চোখা চোখা দাঁতগুলো থেকে ঝিলিক আসতেছে। আমার আত্মা ততক্ষণে জমে বরফ হয়ে গেছে। বাঘের সামনের হাতের নখর গুলো স্লো মোশনে আমার গালে খামচি মারার ঠিক আগ মুহুর্তে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত তিনটা বাজে। এখন না ঘুমালে কালকে সকালে ট্রিপের বাস শীউর মিস হবে। ল্যাপটপটা পাশে রেখে, লাইট নিভিয়ে বালিশটা ঠিক করে নিলাম 🙂


সাইকাসের ফুল

by Md Imran Hasan Hira

রুমটার ভিতরে একগাদা বই। থরে থরে সাজানো বই। সেই পুরনো আমলের বই থেকে শুরু করে চকচকে হ্যারি পটার কোনটাই বাদ নেই। জানালা দুটো দিয়ে ভালই আলো আসছে। সকালের কমলা আলো। দেখে মনে হচ্ছে ফটো এডিটরের Warmth ফিল্টার আপ্লাই করে রাখছে। একদিকের দেয়ালে একটা ব্লাকবোর্ডও আছে।

সবাই মিলে হুরমুড় করে ঘরে ঢুকল। সারাদিন এর দৌড়ঝাঁপ এর পরে ফ্রেশ হয়ে এখন একটু রেস্ট নিতে হবে। ওমা, রুমের ভিতর থেকে স্যার বের হয়ে বলল – সবাই রেডি হও, এখন পরীক্ষা! কি আজব, এই স্টাডি ট্যুরে এসেও পরীক্ষা দিতে হবে!

পরীক্ষা দিতে হলে তো চেয়ার টেবিল লাগবে, সেগুলো কই পাব? স্যার বলল, বইগুলো একসাথে করে টেবিল এর মত বানায়ে নিতে। বাইরে করিডোরে এক্সট্রা চেয়ার আছে, সেগুলো ভিতরে নিয়ে আসলে সবার বসার জায়গা হয়ে যাবে। বই দিয়ে টেবিল বানাতে গিয়ে বাধল ঝামেলা। প্রথমে বইগুলোকে একসাথে করে ছোট ছোট স্তূপ করা হল, তারপর Lego সেটের মত করে একটা টেবিল এর কাছাকাছি কিছু একটা বানানো হল। যতটুকু হয়েছে, তাতে দুইপাশে দুইজন বসে লিখতে পারবে।

পরীক্ষা শুরু হল। এত কাছ ঘেষে সবাই বসা, চাইলেই অন্যের খাতার সব দেখা যায়। কবির কি লিখবে বুঝতেছে না। স্যারের মাথায় গণ্ডগোল আছে, ট্যুরের মাঝখানে বসে আর কোন কাজ পায়নাই! যাই হোক, কবির একটু উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করল বেণু কি লিখতেছে। মেয়েটা লিখেই যাচ্ছে, এত কি লিখতেছে! সব কমন পরছে মনে হয়। বলেই বসল – “এই বেণু, কি লিখিস এত!” এই কথা শুনে, স্যার কটমট চোখে ঘুরে তাকাল কবিরের দিকে, আর দিল এক ঝাড়ি। স্যারের ঝাড়ি খেয়ে ঘুম থেকে তড়াক করে উঠল কবির।

এত সকাল সকাল ঘুম ভাঙ্গার কারনে মেজাজ ব্যাপক খারাপ। তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে যাবার আর একটা কারণ আছে। আজকে কি যেন একটা গুরুত্বপুর্ন কাজের জন্য তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েছিল সে। ওহ, মনে পরছে, বেণু দেখা করতে বলেছে। এই ভ্যালেন্টাইন হারামজাদা’র ছুতা দিয়ে মানুষজন এখনকার সময় বাইরে হুশপাশ করার একটা ফন্দি বের করছে। অবশ্য বেণুর সাথে হুশপাশ করতে কবিরের খারাপ লাগেনা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল দেরি হয়ে যাচ্ছে। এখনই না বের হলে সংসদ ভবন যেতে যেতে সময় পার হয়ে যাবে। আর তখন অন্য সমস্যা আছে। বেণুর রাগের ইমপ্যাক্ট ভ্যালেন্টাইনের উপর রাগের থেকে অনেক বেশী। বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখল গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ভেজা পিচঢালা রাস্তার পাশের ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে থাকল। কবিরের বাসা থেকে সংসদ ভবন ঘণ্টাখানেকের হাটার রাস্তা।

সংসদ ভবন আসতে আসতে বৃষ্টি থেমে গেছে। কিন্তু কিছু একটা ঝামেলা আছে। ফাল্গুনের শুরুতে সাধারণত এইরকম বৃষ্টি হয় না। কবিরের মনে হল সংসদ ভবন জায়গাটাও অন্যান্য সময়ের থেকে একটু অন্যরকম লাগতেছে। সবসময় এই জায়গায় সে ময়লা আবর্জনা দেখে আসছে। আর আজকে কিনা সব পরিষ্কার দেখাচ্ছে! সংসদ ভবনের দক্ষিণের পাশের রাস্তায় সাড়ি সাড়ি সাইকাস গাছ। অগুলার পাশ দিয়েই হাঁটছিল। খেয়াল করে দেখল, রাস্তার আইল্যান্ডের মাঝে কৃষ্ণচূড়াগুলোও কেবল ফুটতে শুরু করেছে। কিছুদূর হেটে গিয়ে দেখল একদল লোক ব্যায়াম করতেছে। সামনে একটু নিচু জায়গা দেখে, লাফ দিয়ে পার হতে যাবে, কিন্তু কি মনে করে পিছনে তাকাল। দেখল আড়ং এর মোড় এর দিক থেকে বেণু আসছে।

মেয়েটাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। শাড়ি পড়ে এসেছে। একটা নাটকীয় ভঙ্গিতে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরবে কিনা চিন্তা করছিল। চিন্তা করতে করতে ততক্ষণে বেণু কাছাকাছি চলে এসেছে। কবিরকে দেখে বেণু একটা আলতো হাসি দিল। আর ভোরের আভায় সেই হাসির ঝিলিকে কবির ভাবল এই রকম একটা মানুষ সে কিভাবে খুজে পেল! কাছে আসতেই কবির ওকে আলগা করে তুলে নিল। বাহ, এত অনেক হালকা। বেণু চেঁচিয়ে উঠল – “ছাড়! শাড়ির ভাজ নষ্ট হয়ে যাবে, অফিস যাচ্ছি তো”। এত উচ্ছল একটা মেয়ের সাথে ওর জীবন পার হবে, সেটা মনে হয়না ও কখনও ভেবেছিল।

হাঁটতে হাঁটতে সাইকাসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল আর কি যেন একটা গানের সুর গুনগুন করছিল বেণু। খুবই পরিচিত গান, কিন্তু কবির ধরতে পারতেছেনা। কবির ভাবতেছিল এই মুহূর্তে সে সাইকাসগুলোর থেকেও সুখী মানুষ। গাছ থেকে ফলগুলো যখন মাটিতে পরছিল, কবির প্রত্যেকটা শব্দ টের পাচ্ছিল। হঠাত করে গাছে জমে থাকা বৃষ্টির পানি ওদের মাথার উপর পড়ল। পানির ফোটাগুলো বেণুর নাকের উপর ভিড় করে স্বচ্ছতার জানান দিচ্ছিল। কবিরের মনে হল, সবকিছু স্লো মোশনে চলছে। বেণুর সাথে হাঁটতে গেলে এটা ওর প্রায়ই মনে হয়, সময়টা যদি থমকে যেত। বছরের বছরের পর ধরে যদি ওরা এভাবে একসাথে হেঁটে যেতে পারত। এমন সময়ই ছোটবোন তারানা ধাক্কা দিয়ে ঘুম থেকে উঠাল – “এই ভাইয়া, এই ভরদুপুরে এত জোড়ে গান চালিয়ে ঘুমাচ্ছ কেন!” কবির চোখ কচলাতে কচলাতে কিছুক্ষণের জন্য হা করে তাকিয়ে থাকল। হেডফোনে তখনও ফুল ভলিউমে বাজতেছে –

আজ যখনই ডাকি
জানি তুমি দিবে সাড়া
এই জীবন ছিল
নদীর মতো গতিহারা দিশাহারা
ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে
আমি হয়ে গেছি তারা


Do you need a Computer Science degree to become a software engineer ?

by Md Imran Hasan Hira

The short answer is — NO (probably the short sighted answer too)

The medium level answer is — You do not necessarily need a Computer Science degree to become software engineer. All you need is Software Engineering knowledge.

To answer in detail, let me ask a question, so that we can narrow down the confusion clouds.

How would you achieve software engineering knowledge ?

There are couple of ways —

  1. Get a Bachelors/Masters in Software Engineering ( Academic degree )
  2. Get Bachelors/Masters in Computer Science ( again Academic degree )
  3. Start studying/practicing on your own to build software ( Personal effort )

#1 is straight forward. But it can happen that your country/university doesn’t have “Software Engineering” as a subject. Then you can follow #2 as an option.

If none of “Software Engineering” or “Computer Science” is available to learn academically, then you can go with #3, which is start studying/practicing on your own. This self study might also happen even if universities in your country has those courses ( i.e. you weren’t qualified enough to pass the admission ).

Not qualifying the admission process doesn’t mean that you can’t be a good engineer after 5 years. It means that you aren’t qualified at that admission moment. If you try consistently and have the proper learnings, you can be a good engineer within similar range of time.

It can also happen that you studied completely different subjects than computer science ( i.e. Statistics ) and later moved to Software engineering.

Back to our main point, CS degree. Why are we talking about two degrees — “Computer Science” and “Software Engineering” ? To know more details, let me explain how has university subject evolved.

In our society, we try to solve a lot of problems and sometimes general people do not posses enough knowledge. If a country needs a lot of medical doctor, and there isn’t sufficient doctors in the country, it’s a good decision to invest in Medicine study. So government funds medical sectors, build medical schools, compensates student fee. This is a long term policy, so that after 5/10 years, the country has enough medicine experts.

The same policy apply for other subjects as well. Depending on the country need ( or policy makers realization ), universities open subjects for further specialization. For example, In Bangladesh University of Engineering and Technology, we didn’t have ‘Computer Science’ subject before 1986. Then it started in a very small number of students ( 30 student per year). Later we saw that we need to more computer science experts and increased the capacity ( 120/year ). Now a days few universities even provide “Software Engineering” as a standalone Bachelor degree. It’s all up to how we foresee the need.

If someone really knew that his final goal is being a Software engineer, then they can focus solely on Software Engineering knowledge for the very beginning. This way they can specialize their skills by avoiding other general computer science knowledge (hardware details) which might not be needed for a specific industry/field/…etc.

Not knowing general computer science terms is not a big problem if the person posses strong analytical skill. They can learn it on purpose while working. But a person already having that knowledge will be faster in learning deeper, given that they both put same effort.

That means, if you achieve fundamental knowledges, you can expand your practice area to other domains quickly. At the end of the day, it depends upon the availability of subjects in Universities and your passion to study/practice.

This pictures reveals a path to become a Software engineer after having computer science knowledges-

As you see there are lots of topics that are covered in Computer Science. But depending upon your work, you might be needing few of them directly. If you move from a Banking Software company to Ecommerce application company, then you gotta know the concepts of their stack. Things are learnable. People can learn them either in university or self practice. Here is a little bit complex picture ( there are more connections , I skipped some of them to avoid spaghetti )

Fundamental knowledges that you see on the top of the above picture, You can get most of them from Universities. It’s also possible to get them if you got proper neighbors. I mean, not all people have parents/friends/uncles who are university teacher or software engineer. Anyway, Universities helps by providing a dedicated learning process.

And then there are business knowledge which you can specialize while working in certain situations. Another interesting part is self learning. If someone thinks that they can learn it by self practice, that is also welcome.

To grow your career, I would suggest — why not both ? Getting into a university will give you the chance to know from more knowledgable people. At the same time if you keep practicing self studies, then you specialize on your desires. Happy Learning!


কম্পিউটার সায়েন্স ডিগ্রি কি সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ কোন কাজে লাগে ?

by Md Imran Hasan Hira

এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে কিছুক্ষণ মার্কামারা পজিশনে বসে ছিলাম। কি করলাম এই জীবনে CSE তে B.Sc. করে! What is life?

যাই হোক, “What is life?” এর দুশ্চিন্তা থেকে বেরুতে একটু সময় লাগল। তবে কিছুক্ষণ ভাবার পরে যা বুঝলাম, তাতে মনে হল প্রশ্নটা একেবারে অবান্তর না।

আমি যে কোম্পানিতে কাজ করি, সেখানে কিছু Software Developer আছে যাদের Computer Science এ অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি নাই। কিন্তু তারাও খুব ভাল coding করতে পারে, ভাল system বানাতে পারে। কিভাবে পারে ?

কৌতূহল থেকে তাদের background নিয়ে খোজ নিয়েছি আগে। সেটা বললেই ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। কারও কারও ব্যাকগ্রাউন্ড EEE, Physics, Statistics। কেউ কেউ আবার ডিপ্লোমা, কিছু আছে কোন ডিগ্রিই নাই। হাইস্কুলে যে ম্যাথ করে আছে সেটা দিয়েই দিব্যি কাজ করে যাইতেছে।

একটা মজার ব্যাপার হইতেছে যাদের সরাসরি Engineering ব্যাকগ্রাউন্ড, তাদের সাথে technical কথাবার্তা করা সহজ, কারণ তারা টার্মগুলো/কনসেপ্টগুলো অলরেডি জানে। কিন্তু বাকিদের যাদের সরাসরি Engineering ব্যাকগ্রাউন্ড না, তাদের সাথেও technical কথাবার্তা চালানো যায়। একটু সময় লাগে। তবে তাদের Analytical Knowledge ভাল হবার কারণে, একবার তারা কনসেপ্ট বুঝে ফেললে আর সমস্যা হয়না।

তখন বুঝলাম যে, যাদের ক্যারিয়ারের শুরু অন্য জায়গা থেকে, তারা বছরের পর বছর ধরে কয়েকটা বিশেষ টপিকে কাজ করতে করতে সেটাতে Specialized Skill grow করেছে। আমাদের ডিপার্টমেন্টের ৪ বছরের কোর্সে Computer Science এর ব্যাপারে আমরা ঠিক একইভাবে এরকম কিছু knowledge অর্জন করি। এর সবগুলোই যে একটা কোম্পানিতে ব্যবহার করা যাবে এমন না। তবে যেহেতু এগুলো Fundamental Knowledge, তাই দেখা যায় এগুলোকে খুব সহজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যায়।

আমাদের CSE কোর্সের কারিকুলাম এমনভাবে ডিজাইন করা, যেটাতে Computer Science এর অনেক শাখা-প্রশাখা কাভার করে। এবং এই জিনিসটাই আমাকে কাজের মধ্যে একটা অতিরিক্ত সুবিধা দেয়। Software Requirement থেকে শুরু করে, কখন কোন ধরনের Computer System যুতসই হবে সেগুলা খুঁজে বের করা, কোন একটা problem এর efficient সমাধান খুজে পাওয়া, এগুলাতে আমি দেখি Departmental কনসেপ্টগুলো অনেক কাজে লাগে।

তাই, আমার মনে হয়, ভাল Software Engineer হবার জন্য Computer Science এর জ্ঞান এর দরকার আছে। খুব বেশী জেনারেল জ্ঞান এর দরকার আছে কিনা, সেটা বলা একটু কঠিন। কারণ “Engineering” অলরেডি একটা specialized skill. তার উপর “Computer Science & Engineering” আর একটা specialization । এরপর “Software enginerring” সেটার গভীরে আরেক ধাপ বিশেষ পড়াশুনা। কেউ যদি শুরুতেই এত ডিটেইল লেভেলের specialized skill গ্রো করতে চায়, তাতেও যে সমস্যা আছে এমন না। ফাইনালি শিখলেই হইল 

 


Career as a Software Engineer – Part 2 ( Planting the seed )

by Md Imran Hasan Hira
( Link for Part 1 – Career as a Software Engineer – Part 1)

আজকের পোষ্ট কিভাবে তিমি মাছের চটপটি দিয়ে সেমাই রান্না করবেন, সেটা নিয়ে। স্যরি, কিভাবে দুই টাকা ইনকাম করে এক টাকা খরচ করবেন ? ধুর ছাই, কিভাবে টিউশনির টাকা দিয়ে ভবিষ্যত কিনবেন…

খুব কঠিন একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি, ক্যাম্পাস লাইফে পোলাপান কিভাবে সময় ব্যয় করে ?
১। র‍্যাগ কর্নারে আড্ডা দিয়ে
২। স্বপ্ন দেখে ( ঘুমিয়ে/দিনের বেলা )
৩। টিউশনি করে
৪। ফুটবল খেলে
৫। পার্টটাইম চাকুরী করে
৬। টিচার ফাইটীং করে
৭। ডিবেটীং ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, সিস্টেম ডিজাইন ক্লাব এই সমস্ত হাবিজাবি(!) কাজ করে
৮। … Read the rest of this entry »


Career as a Software Engineer

by Md Imran Hasan Hira

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার
( টার্গেট অডিয়েন্সঃ সেকেন্ড ইয়ার/+ )

বুয়েট থেকে কম্পিউটার সায়েন্স পড়াশুনা করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ক্যারিয়ার নেয় কতজন ? আমাদের ‘০৭ ব্যাচ যদি চিন্তা করি, তাহলে আমি একটা ঝটপট কাউন্ট দিলাম। যতটুকু জানি, তার উপর ভিত্তি করলে আপাতত আমাদের অনুপাতটা এখন এরকম –

নন আকাডেমিক চাকুরীজীবীঃ ৫০ জন ( সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, সরকারী চাকুরী, কিংবা নিজের কোম্পানি )
মিসিং ডাটাঃ ২২ জন ( এদের ব্যাপারে আমি নিজে জানিনা দেখে বলতে পারতেছি না )
আকাডেমিকঃ ৪৮ জন ( পড়াশুনা কিংবা ইউনিভার্সিটী ফ্যাকাল্টি )

আমরা পাস করে বেরিয়েছি ২০১৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারীতে। এই পাচ বছরে অনেকেই অনেক রকম কাজ করে ফেলছে। উপরে যেই অনুপাতটা আছে, তাতেও কিছু গড়মিল আছে। সময়ের সাথে সাথে কিংবা ব্যাচ-টু-ব্যাচ এইটা কিছু পরিবর্তন হয়। তারপরেও আমি অনুপাতটা বললাম এই জন্য যে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে – “বুয়েট থেকে বের হয়ে কয়জন দেশে আছে?” বা “পাস করে অ্যাকাডেমিকস এ আছে কতজন?” । দেখতেই পাইতেছ “সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার” আর “আকাডেমিক” প্রাআআয় সমানে সমান। আসলে এই নাম্বার গুলা যতটা না গুরুত্বপুর্ন, তার থেকে গুরুত্বপুর্ন হল একজন নিজে কি চাচ্ছে। যেমন ধর অনেকেই পাস করে শুরুতে চাকরিতে ঢুকেছিল, কিন্তু এখন পড়াশুনা করতে বাইরে চলে গেছে। আবার অনেকেই যারা এখন পড়াশুনা করতেছে, কিছুদিন পর তাদের একটা অংশ বের হয়ে চাকরিতে ঢুকবে। Read the rest of this entry »


Theme by Ali Han | Copyright 2025 Md Imran Hasan Hira | Powered by WordPress